পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেপালের বর্ত্তমান গুর্খা রাজগণ।
৮৭

 এই শিশুকে পাইয়া ভীমসেন থাপার শক্তি অপ্রতিহত হইল। এই ভীমসেন থাপা রাজ্যশাসনবিষয়ে অতি যোগ্যপুরুষ ছিলেন। ইনি যদিও অন্তরে ইংরাজদিগের বন্ধু ছিলেন না, কিন্তু ইংরাজের সহিত বিবাদে যে নেপালের স্বাধীনতা লুপ্ত হইবে তাহা বিলক্ষণ বুঝিতেন। এই হেতু কোন প্রকার অশান্তির কারণ উপস্থিত হইতে দিতেন না। ইংরাজের সহিত সদ্ভাব এবং শান্তি, নেপালের স্বাধীনতা রক্ষার এক মাত্র উপায় বলিয়া জানিয়াছিলেন। ইংরাজের সহিত ঘনিষ্টভাবে আসিতে কিছুতেই সম্মত ছিলেন না; এবং যাহাতে ইংরাজ প্রত্যক্ষ কিম্বা পরোক্ষ ভাবে কোন প্রকারে নেপালের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করিতে না পারেন, সে বিষয়ে দূরদর্শিতার সহিত ইংরাজের সকল চেষ্টা ব্যর্থ করিতে সক্ষম হইয়াছিলেন। কি জঙ্গ বাহাদুর কি বর্ত্তমান মন্ত্রিগণ এ পর্য্যন্ত সকলেই ভীমসেন থাপার প্রদর্শিত পন্থা অনুসরণ করিয়া আসিতেছেন। নেপালের রাজমন্ত্রীদিগের বিষয় আর একটী বিশেষ কথা বলিতেছি;—ইংরাজগণ প্রথম হইতেই নানা উপায়ে রাজমন্ত্রীদিগকে হস্তগত করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন; কিন্তু তাঁহারা যতই ক্ষমতাপ্রিয়, স্বার্থপর হউন না কেন, জাতীয় স্বাধীনতা বিসর্জ্জন করিতে কিছুতেই প্রস্তুত হন নাই। পরস্পরের শত্রুতা বিস্তর করিয়াছেন, স্বজনের রক্তে নেপাল বারম্বার কলুষিত হইয়াছে, কিন্তু দেশের বৈরিতা কেহই করেন নাই।

 ভীমসেন থাপার সময়ে নেপালের অনেক আভ্যন্তরীণ উন্নতি সাধিত হইয়াছিল। ১৮১৬ সালের সন্ধির পর যদিও নেপাল-