পাতা:ছিন্নমুকুল - স্বর্ণকুমারী দেবী.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একত্রিংশ পরিচ্ছেদ
১৪৫

উদ্দেশ্যে পর্য্যন্ত তখন সন্দেহ জন্মেছে, বিধাতাপুরুষকে পর্য্যন্ত কত না অভিশাপ প্রদান করেছি। আজ মনে হচ্ছে, —এ ভালবাসা এ আনন্দ যার জন্যে সঞ্চিত ছিল তার মত সার্থক জীবন আর কার! তার মত বিধাতার প্রিয়পুত্র আর কে?” হিরণ আনন্দে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলিয়া নীরব হইলেন। কনকেরও দীর্ঘ নিঃশ্বাস পড়িল। হিরণ আবার বলিলেন, “কনক সত্যই কি তুমি আমার? কেবল মনে নয়, আমার নয়নেও কি তুমি এখন থেকে চিরবিরাজিত, চিরপ্রকাশিত হয়ে থাকবে? কেবল অন্তরে নয়, বাইরে জগৎসংসারের সাক্ষাতেও কি এখন থেকে তুমি আমার চির আপনার হ’য়ে, গৃহলক্ষ্মী রূপে বিরাজ করবে? কে জানে এত সৌভাগ্য মনে করতেও যেন কেমন আশঙ্কা হয়। কনক আজ তবে এখন বিদায় লই। কাল আবার তোমার দাদার সঙ্গে দেখা করতে আসব।”

 বলিয়া তিনি নৌকায় উঠিলেন, দাঁড়িরা ক্ষিপ্রহন্তে দাঁড় বাহিয়া অল্প ক্ষণের মধ্যেই পরস্পরের দৃষ্টিপথ হইতে পরস্পরকে দূরে লইয়া ফেলিল; কিন্তু মুগ্ধ প্রণয়ী দুই জন তাহার পরও বহুক্ষণ পর্য্যন্ত সতৃষ্ণনেত্রে পরস্পরের উদ্দেশে শূন্য পথে চাহিয়া রহিলেন।

একত্রিংশ পরিচ্ছেদ

প্রস্তাব

 কনক জীবিত শুনিয়া যামিনীনাথ তাহার পরিণয়াকাঙ্ক্ষী হইলেন। তাহার মত স্বামী পাওয়া কনকের ত পরম সৌভাগ্য, এই ভাবিয়া প্রমোদ অত্যন্ত আহ্লাদিত হইলেন, এবং কলিকাতায় গিয়া সমস্ত স্থির করিয়া বাটী প্রত্যাগমন করিলেন। এখন কেবল কনকের মত লইয়া