চশমা পরে বিচার করে, চিরে দেখাই চুল—
উঠতে বসতে করছে সবাই হাজার গণ্ডা ভুল।
আমার চোখে ধুলো দেবে সাধ্যি আছে কার?
ধমক শুনে ভূতের বাবা হচ্ছে পগার পার।
হাসছ? বটে। ভাবছ বুঝি মস্ত তুমি লোক,
একটি আমার ভেংচি খেলে উলেট যাবে চোখ।
সকলে। দিচ্ছ গালি, লোকের তাতে কিবা এল গেল?
আকাশেতে থুতু ছুঁড়ে–নিজের গায়েই ফেল।
চতুর্থ। আমার নাম ‘কিন্তু’, আমায় ‘কিন্তু’ বলে ডাকে,
সকল কাজে একটি কিছু গলদ লেগে থাকে।
দশটা কাজে লাগি কিন্তু আটটা করি মাটি,
ষোলো-আনা কথায় কিন্তু সিকিমাত্র খাঁটি।
লম্ফঝম্প বহুৎ কিন্তু কাজের নেইকো ছিরি——
ফোঁস্ করে যাই তেড়ে—আবার ল্যাজ গুটিয়ে ফিরি।
পাঁচটা জিনিস গড়তে গেলে, দশটা ভেঙে চুর—
বল্ দেখি ভাই, কেমন আমি সাবাস বাহাদুর!
সকলে। উচিত তোমায় বেঁধে রাখা নাকে দিয়ে দড়ি,
বেগার খাটা পণ্ড কাজের মূল্য কানাকড়ি।
পঞ্চম। আমার নাম ‘তবু’, তোমরা কেউ কি আমায় চেনো?
দেখতে ছোটো, তবু আমার সাহস আছে জেনো।
এতটুকু মানুষ, তবু দ্বিধা নাইকো মনে,
যে কাজেতেই লাগি আমি খাটি প্রাণপণে।
এমনি আমার জেদ, যখন অঙ্ক নিয়ে বসি,
একুশবারে না হয় যদি, বাইশবারে কষি।
হাজার আসুক বাধা, তবু উৎসাহ না কমে,
হাজার লোকে চোখ রাঙালে, তবু না যাই দমে।
সকলে। নিষ্কম্মারা গেল কোথা, পালাল কোন দেশে?
কাজের মানুষ কারে বলে দেখুক এখন এসে।
হেসে খেলে, শুয়ে বসে, কত সময় যায়,
সময়টা যে কাজে লাগায়, চালাক বলে তায়।
সন্দেশ—মাঘ, ১৩২৩