ছোটবেলা থেকেই হিন্দুরা পুরাণের গল্প, রামায়ণ-মহাভারতের গল্প, অবতারদের গল্প একনাগাড়ে শুনতে শুনতে ও পড়তে পড়তে একসময় বিশ্বাস করতে শুরু করি আত্মা অমর। মৃত্যুতেই সবকিছু শেষ হয়ে যায় না। আমরা আবার জন্মাই। আমাদের মধ্যেই কেউ কেউ পূর্বজন্মের স্মৃতি উদ্ধার করতে পারে। এদেরকেই বলি জাতিস্মর।
মুসলিম বা খ্রিস্টান ধর্ম যেহেতু পুনর্জন্মে বিশ্বাস করে না, তাই
তারা ছোটবেলা থেকেই এমন এক পরিবেশে মানুষ হয়,
যেখানে পুনর্জন্মের কোনও স্থান নেই। সুতরাং
বড় হয়ে ওঠার পর তাদের কাছে
পুনর্জন্ম এক অবাস্তব চিন্তা।
পরামনোবিজ্ঞানীরা জন্মান্তরে বিশ্বাস করেন। পূনর্জন্ম বা জন্মান্তরবাদ দাঁড়িয়ে রয়েছে অন্ধ-বিশ্বাসের ওপর।
কিছু পরামনোবিজ্ঞানী দাবি করেন, তারা সম্মোহন করে সম্মোহিত ব্যক্তির স্মৃতিকে পিছোতে পিছোতে শূন্য বয়স এবং জন্মলগ্ন অতিক্রম করে তার পূর্বজন্মের দিনগুলোতেও নিয়ে যেতে পারেন।
মনোবিজ্ঞান মনে করে কোনও একজন প্রবীণ ব্যক্তিকে সম্মোহন করে তার হারিয়ে যাওয়া শৈশবের কিছু স্মৃতিকে আবার উদ্ধার করা সম্ভব। কারণ সম্মোহিত ব্যক্তির বেশ কিছু শৈশব স্মৃতি মস্তিষ্ক কোষে সঞ্চিত থাকে। যে-ভাবে স্মৃতি সঞ্চিত থাকে কম্পিউটারে। কম্পিউটারকে ঠিকমতো চালিয়ে যেমন সঞ্চিত স্মৃতি উদ্ধার করা সম্ভব, ঠিক তেমনি করেই সম্মোহনের সাহায্যে মানুষের অতীতের কিছু সঞ্চিত অথচ চাপা পড়ে থাকা স্মৃতিকে উদ্ধার করা সম্ভব।
মনোবিজ্ঞান সম্মোহনের সাহায্যে অতীত স্মৃতি উদ্ধারের তত্তকে মেনে নিয়েছে। কিন্তু পূর্বজন্মের স্মৃতি উদ্ধারের তত্ত্বকে কখনই মেনে নেয়নি।
পরামনোবিজ্ঞানীদের কথামত আত্মার শরীরও নেই, মস্তিষ্কও
নেই। মস্তিষ্ক না থাকলে মস্তিষ্ক কোষও নেই। মস্তিষ্ক
কোষ না থাকলে স্মৃতি জমা থাকার প্রশ্ন নেই।
পূর্বজন্মের স্মৃতি উদ্ধারেরও প্রশ্ন নেই।