বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৪
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ

কখনই বিস্মৃত হন নাই। স্বদেশী আন্দোলনের সমুদ্রমন্থনে কেবল অমৃত ও লক্ষ্মীই উঠেন নাই, হলাহলও উত্থিত হইয়াছিল। কাহারা নীলকণ্ঠ মৃত্যুঞ্জয়ের মতো সেই হলাহল পান করিয়াছিল, সেকথা এখানে আলোচনা করিব না। ১৯০৮ সালের পর রবীন্দ্রনাথ প্রকাশ্য রাজনৈতিক আন্দোলন হইতে অন্তরালে সরিয়া গেলেন এবং গঠনমূলক কার্যে সম্পূর্ণরূপে আত্মনিয়োগ করিলেন। তৎপূর্বে ১৯০৭ সালেই “ব্যাধি ও প্রতিকার” প্রবন্ধে তিনি লিখিয়াছিলেন,—“দেশের যে সকল যুবক উত্তেজিত হইয়া উঠিয়াছেন, তাঁহাদের প্রতি একটি মাত্র পরামর্শ এই আছে,—সমস্ত উত্তেজনাকে নিজের অস্থিমজ্জার মধ্যে নিস্তব্ধভাবে আবদ্ধ করিয়া ফেল, স্থির হও, কোনো কথা বলিও না, অহরহ অত্যুক্তি প্রয়োগের দ্বারা নিজের চরিত্রকে দুর্বল করিয়ো না। আর কিছু না পার খবরের কাগজের সঙ্গে নিজের সমস্ত সম্পর্ক ঘুচাইয়া। যে কোনো একটি পল্লীর মাঝখানে বসিয়া, যাহাকে কেহ কোনদিন ডাকিয়া কথা কহে নাই তাহাকে জ্ঞান দাও, আনন্দ দাও, আলো দাও, তাহার সেবা কর, তাহাকে জানিতে দাও, মানুষ বলিয়া তাহার মাহাত্ম্য আছে—সে জগৎ সংসারের অবজ্ঞার অধিকারী নহে। অজ্ঞান তাহাকে নিজের ছায়ার কাছেও স্তব্ধ করিয়া রাখিয়াছে; সেই সকল ভয়ের বন্ধন ছিন্ন করিয়া তাঁহার বক্ষপট প্রশস্ত করিয়া দাও, তাহাকে অন্যায় হইতে, অনশন হইতে, অন্ধ সংস্কার হইতে রক্ষা কর।”