বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ

রবীন্দ্রনাথ যে এই পল্লীসংগঠন সম্বন্ধে কত চিন্তা করিতেন, কালীমোহনবাবু বহুবার আমার নিকট তাহা বলিয়াছেন। কবির বন্ধু এল্ম্হার্স্ট সাহেব এই পল্লীসংগঠন কার্যে বিশেষ উৎসাহী ছিলেন এবং এজন্য তিনি বার্ষিক অর্থসাহায্যের ব্যবস্থাও করেন। উহার ফলে শ্রীনিকেতনের কাজের বিশেষ সুবিধা হইয়াছিল সন্দেহ নাই।

 রবীন্দ্রনাথ গ্রামবাসীদের দুঃখদুর্দশা কিরূপ গভীরভাবে অনুভব করিতেন এবং পল্লীসংগঠনের কাজ কত বড় মনে করিতেন, কয়েকবার তাঁহার সহিত সাক্ষাৎকালে তাঁহার নিজের মুখ হইতেই সে বিষয়ে শুনিবার সৌভাগ্য আমার হইয়াছিল। একবার তিনি আমাকে বলেন,—“দেশের সবচেয়ে বড় দুর্গতি গ্রামবাসীদের এই ঘোর দারিদ্র্য ও অস্বাস্থ্য। তাহারা কুকুর বিড়ালের মতো না খেয়ে মরে, বিনা চিকিৎসায় মরে, এমন কি চৈত্রের কাঠফাটা রৌদ্রে একফোটা পানীয় জলও তাদের পক্ষে দুর্লভ হয়ে ওঠে। যদি এই গ্রামবাসীদেরই বাঁচান না গেল, তাদের দুঃখদুর্দশা দূর করা না গেল, তবে আর দেশোদ্ধারের বড় বড় কথা বলে লাভ কি?”

 আর একবার কয়েকজন সাংবাদিক মিলিয়া তাঁহার সঙ্গে শান্তিনিকেতনে সাক্ষাৎ করিয়াছিলাম। তিনি আমাদের বলেন,—“তোমরা বড় বড় রাজনীতির কথা লেখ, কিন্তু ও সবে আমার মন ভরে না। এই যে প্রতিদিন গ্রামবাসীদের দুঃখদারিদ্র্য চোখের সম্মুখে দেখ‍্তে পাচ্ছি, এইটাই আমার