পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/২৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জম্বুমরণ [ ২৩৯ } जान्नुभङ्ग' - - -o-o: - - হুইলে বিধবা স্ত্রীলোকের পতির জলন্ত চিতায় পুড়িয়। মরেন । কিন্তু ধৰ্ম্মের চক্ষেও ছোটবড় ভেদ দেখানে। চাই, হিন্দুশাস্ত্রের এইটাই নাকি চমৎকার মাহাত্ম্য, তাই সাধারণ লোকের অমুমরণের ব্যবস্থাটা অন্ত রকম। সামান্ত ঘরের স্ত্রীলোকের বিধবা হইলে আগে তাহাদিগকে ছুরীর খোচা মারিয়া বধ করিতে হয়, পরে তাহাদের মৃতদেহের সৎকার হইয়া থাকে। এই রূপ একটা সহমরণের সময় জনৈক ইউরোপীয় সেখানে উপস্থিত ছিলেন । তিনি দrড়।ইয়। আগাগোড়া সমস্ত ব্যাপার স্বচক্ষে দেখেন। ঘটনাট এই,—অম্পনম নগরে একজন দরিদ্র লোকের মৃত্যু হয়। তাহায় ভিন স্ত্রী। তন্মধ্যে সৰ্ব্ব কনিষ্ঠ অনুমরণের নিমিত্ত প্রস্তুত হইলেন। তাহার পিতা মাতা, শ্বশুর শ্বাশুড়ী সকলেই অনেক বুঝাইলেন, অনেক নিযেধ করিলেন, কিন্তু তিনি কাহারও কথা মানিলেন না। চিরকাল মনের আগুনে গুমে গুমে পোড়ার চেয়ে, একেবারে প্রাপ্তত্যাগ করা ভাল। সতী অমুগমনের আয়োজন করিলেন। স্বামিবিয়োগের পরদিন স্নানাদি করিয়া তিনি উত্তম বস্ত্রালঙ্কার পরিলেন। আত্মীয় স্বজন দেখা করিতে আসিল, তিনি সকলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিলেন । শেষে পুৰ্ব্বাহ দেবাচনায় কাটিয়া গেল। অপরাহ্ন চারিটার সময় তাহার স্বামীর মৃতদেহ বাহির করা হইল । পুরে। হিতের মন্ত্র পড়িতে লাগিলেন । অপরাপর লেীকে মৃতদেহকে স্নান করাইয়া তাহার উপর ফুল ছড়াইয়। দিল । তখন পুরবাসিনীর সতীকে বাহিরে আনিলেন। আর সে সাজ নাই, সে বসনভূষণ নাই। তাহার অঙ্গে কেবল একখানি শাদা ধূতি, চুলে ফুলের গোছা । সতী স্বামীর সন্মুখে দক্ষিণ হস্ত তুলিয়া স্থিরগম্ভীরচিত্তে ইষ্টদেবতার নাম জপ করিলেন । পুরকামিনীর অগ্রসর হইয়া তাহার হাতে এক একটী ফুলের তোড়া দিল । সতী অভিবাদন করিয়া সেই তোড়। আবার সকলকে ফিরিয়া দিলেন। তাহার পর সতী অার একবার ইষ্টদেবতার নাম লইয়া স্বামীর মন্তক, বক্ষঃস্থল, নাভি, জামু এবং পদতল আত্মাণ করিলেন । পুৰ্ব্বাঙ্গুষ্ঠান ফুরাইল। শেষে সতীর ভাই তাহার নিকটে আসিয়া ধীরে ধীরে জিজ্ঞালিলেনু,—‘ভগিনি! তবে • সত্যই কি পতির অনুগমন করিবে ? স্ত্রীলোকটী বলিলেন— ‘ছ । তাহাঙ্গ ভ্রাতা তখন একখানি চুরী লইয়া কহিলেন-দেখ আমি তৰে তোমার প্রাণ বধ করি, [vv)

  • তাহাতে আমার কোন অপরাধ নাই ।” এই ৰলিয়া র্তাহার ভগিনীর বক্ষঃস্থলে অল্প অস্ত্রাঘাত করিয়া তিনি প্রস্থান করিলেন । শেষে আর একজন সন্ত্রান্ত ব্যক্তি আসিয়া স্ত্রীলোকটকে ছুরীরম্বারা একেবারে মারিয়৷ ফেলিলেন। দম্পতীর মৃত্যুর কিছু দিন পরে তাহাদের অস্ত্যেষ্টি ক্রিয়া সম্পন্ন হইল ।

fকন্তু ভারতবর্ষে স্ত্রীহত্যা করিবার প্রণালী অন্ত রকম ছিল । ছোট হউক বড় হউক, এ দেশের লোকে সতীকে পতির চিতনিলে, জীবিত থাকিতে থাকিতেই পতঙ্গের মত পোড়াইয়া মারিতেন। এই দারুণ নিষ্ঠুর আচার কভ দিন হইতে চলিয়া আসিতেছিল, তাহা বলা যায় না । কিন্তু বৈদিক সময়ে সহমরণ ছিল না, বেদই তাহার জীবন্ত প্রমাণ । লর্ড বেণ্টিঙ্ক এবং রামমোহন রায় যখন সহমরণ প্রথা উঠাইয়! দিবার নিমিত্ত যত্ন করিয়াছিলেন, সে সময়ে এদেশের ধৰ্ম্মশাস্ত্র ব্যবসায়ীরা অনেক আপত্তি করেন ; সহমরণের অমুকুলে স্মৃতি ও পুরাণাদি হইতে প্রমাণ দেখান, বেদ হইতেও প্রমাণ তুলিয়াছিলেন। কিন্তু সে মিথ্যা কথা । বেদে সহমরণের প্রমাণ নাই, মমুও অমুমরণের ব্যবস্থা দেন নাই। তখন হিন্দুরা কেবল জেদ করিয়া কতকগুলা মিথ্যা আপত্তি দেখাইয়াছিলেন । র্তাহারা ভাবিলেন,— এই পবিত্র মাটী হইতে বদি স্ত্রীহত্যা করা রহিত হয়, তাহা হইলে হিন্দুধৰ্ম্ম উঠিয়া যাইতে আর বাকি থাকিল কি ? ধৰ্ম্মতরুর পাতা খসিল, শাখ ভাঙ্গিল,জীবন শুকাইয় গেল। কাজেই যবনের রাজ্যে যবন হইয়া থাকা কেবল । বিড়ম্বন মাত্র । মনে মনে এই সকল বুঝিয়। তখনকার হিন্দুর বেদমন্ত্রের মনগড়া অর্থ দিয়া আপত্তি দেখাইয়াছিলেন । [ ইমা নারীর ইত্যাদি ঋয়ুন্ত্রের অর্থ অসুমুতা শব্দে দেখ ] । কিন্তু মহাভারতের সময় সহমরণ চলিত হইয়াছিল। পাণ্ডুর মৃত্যুর পর মাদ্রী তাহার অনুগমন করেন । রাজতরঙ্গিণীর মতে, কলির ৬৫৩ বৎসর গত হইলে কুরুপাণ্ডবেরা ভূতলে প্রাচুভূত হইয়াছিলেন। শতেষু য: সৰ্দ্ধেযু ত্র্যধিকেষু চ ভূতলে। কলেগতেযু বর্ষাণামভবন কুরুপাওবা । এখন কলির গতাব ৪৯৮৬, অতএব ৪৩৩৩ বৎসর গত হইল পাণ্ডবেয়া জীবিত ছিলেন । তাহার পাচ সাত শত বৎসর পূর্কে যদি সহমরণ চলিত হইয়া থাকে, তৰে প্রায় পাচ হাজার বৎসর ধরিয়া এ দেশে এই কুপ্রথা