আজাদী সৈনিকের ডায়েরী/আজাদ হিন্দ বাহিনী সমূহের বিবরণ

উইকিসংকলন থেকে

২৬ শে ডিসেম্বর ১৯৪৩:

 শীঘ্রই ভারত আক্রমণ আরম্ভ হইবে; তাহার তোড়জোড় চলিতেছে। আমাদের প্রধান অফিস রেঙ্গুনে স্থানান্তরিত হইবে।

 আজাদ হিন্দ্ ফৌজ সংগঠিত হইয়াছে। এই সেনাদল প্রধানত ভারতীয় সেনাবাহিনীর যে সব সৈন্য ধরা পড়িয়াছে তাহাদের লইয়া গঠিত। অসামরিক লোকদের লইয়াও একটি বৃগেড তৈয়ারী হইয়াছে। প্রায় ৬০।৭০ হাজার সৈন্য সংগৃহীত হইয়াছে। ইহার মধ্যে প্রায় অর্দ্ধেক বেসামরিক অধিবাসী। প্রথমে যখন ফৌজ গঠিত হয় এই কয়টি বিভাগ ছিল।

 (১) হিন্দুস্থান ফিল্ড দল:

 এই দলে ছিল ১,২ ও ৩ নং পদাতিক বাহিনী, আই-এ-এফ্-সি বাহিনী, ভারী কামান বাহিনী, ১নং ইঞ্জিনিয়ার বাহিনী, ১নং সাঙ্কেতিক সাংবাদিক (সিগ্‌ন্যালার) দল, ১নং চিকিৎসক বাহিনী এবং ১নং টি-পি-টী বাহিনী।

 (২) শার্দুল গেরিলা বাহিনী:

 এই বাহিনীতে আছে গান্ধী রেজিমেণ্ট, নেহরু রেজিমেণ্ট ও আজাদ গেরিলা রেজিমেণ্ট।

 সম্প্রতি নেতাজীর নামে এক নূতন সৈন্যদল গঠিত হইয়াছে—বসু বৃগেড্ (১নং রেজিমেণ্ট্)।

 (৩) বিশেষ সার্ভিস্ দল (স্পেশ্যাল সার্ভিস্ গ্রুপ)

 (৪) সংবাদ সংগ্রাহক দল (ইনটেলিজেন্স গ্রুপ্)

 (৫) সংরক্ষিত দল (রিজার্ভ)

 জাপানীদের সঙ্গে আমাদের সৈন্যদলের কোন সম্পর্ক নাই। বৃটিশেরা আত্মসমর্পণ করিলে যে সকল সাজোয়া গাড়ী, ট্যাঙ্ক, কামান, মেসিনগান, বন্দুক প্রভৃতি পাওয়া গিয়াছিল, জাপানীদের সেগুলিতে প্রয়োজন হয় নাই। আমরা সেগুলি পাইয়াছি; শুনিতেছি নেতাজী বিনামূল্যে কোন জিনিষ লইবেন না, পাছে তাহাদের বাধ্যবাধকতায় থাকিতে হয়।

 যুদ্ধবিদ্যা শিখিবার জন্য ৯টী মিলিটারি কেন্দ্র আছে। অফিসারদের জন্য যে কেন্দ্র সিঙ্গাপুরে আছে তাহাতে উপযুক্ত সৈনিকদের আধুনিক যুদ্ধ পদ্ধতি শিক্ষা দেওয়া হয়। শিক্ষাদান ও আদেশ হিন্দীভাষায় দেওয়া হইতেছে। কয়েকজনকে উচ্চ সামরিক শিক্ষার জন্য শীঘ্রই জাপানে পাঠানো হইবে।