উৎসর্গ/৪৩
সাঙ্গ হয়েছে রণ ।
অনেক যুঝিয়া অনেক খুঁজিয়া
শেষ হল আয়োজন ।
তুমি এসো এসো নারী ,
আনো তব হেমঝারি ।
ধুয়ে - মুছে দাও ধূলির চিহ্ন ,
জোড়া দিয়ে দাও ভগ্ন - ছিন্ন ,
সুন্দর করো সার্থক করো
পুঞ্জিত আয়োজন ।
এসো সুন্দরী নারী ,
শিরে লয়ে হেমঝারি ।
হাটে আর নাই কেহ ।
শেষ করে খেলা ছেড়ে এনু মেলা ,
গ্রামে গড়িলাম গেহ ।
তুমি এসো এসো নারী ,
আনো গো তীর্থবারি ।
স্নিগ্ধহসিত বদন - ইন্দু ,
সিঁথায় আঁকিয়া সিঁদুর - বিন্দু
মঙ্গল করো সার্থক করো
শূন্য এ মোর গেহ ।
এসো কল্যাণী নারী ,
বহিয়া তীর্থবারি ।
বেলা কত যায় বেড়ে ।
কেহ নাহি চাহে খররবিদাহে
পরবাসী পথিকেরে ।
তুমি এসো এসো নারী ,
আনো তব সুধাবারি ।
বাজাও তোমার নিষ্কলঙ্ক
শত - চাঁদে - গড়া শোভন শঙ্খ ,
বরণ করিয়া সার্থক করো
পরবাসী পথিকেরে ।
আনন্দময়ী নারী ,
আনো তব সুধাবারি ।
স্রোতে যে ভাসিল ভেলা ।
এবারের মতো দিন হল গত
এল বিদায়ের বেলা ।
তুমি এসো এসো নারী ,
আনো গো অশ্রুবারি ।
তোমার সজল কাতর দৃষ্টি
পথে করে দিক করুণাবৃষ্টি ,
ব্যাকুল বাহুর পরশে ধন্য
হোক বিদায়ের বেলা ।
অয়ি বিষাদিনী নারী ,
আনো গো অশ্রুবারি ।
আঁধার নিশীথরাতি ।
গৃহ নির্জন , শূন্য শয়ন ,
জ্বলিছে পূজার বাতি ।
তুমি এসো এসো নারী ,
আনো তর্পণবারি ।
অবারিত করি ব্যথিত বক্ষ
খোলো হৃদয়ের গোপন কক্ষ ,
এলো - কেশপাশে শুভ্র - বসনে
জ্বালাও পূজার বাতি ।
এসো তাপসিনী নারী ,
আনো তর্পণবারি ।