কথামালা (১৮৮৫)/একচক্ষু হরিণ
অবয়ব
(পৃ. ৩২-৩৩)
একচক্ষু হরিণ
এক একচক্ষু হরিণ, সতত, নদীর তীরে চরিয়া বেড়াইত। নদীর দিকে ব্যাধ আসিবার আশঙ্কা নাই, এই স্থির করিয়া, নিশ্চিন্ত হইয়া, স্থলের দিকে ব্যাধ আসিবার ভয়ে, সতত সেই দিকে দৃষ্টি রাখিত। দৈবযোগে, এক দিবস, কোনও ব্যাধ নৌকায় চড়িয়া যাইতেছিল। সে, দূর হইতে, ঐ হরিণকে চরিতে দেখিয়া, উহাকে লক্ষ্য করিয়া, শরনিক্ষেপ করিল। হরিণ, মনে মনে এই ভাবিয়া, প্রাণত্যাগ করিল, আমি, যে দিকে বিপদের আশঙ্কা করিয়া, সর্ব্বদা সতর্ক থাকিতাম, সে দিকে বিপদের কোনও কারণ উপস্থিত হইল না; কিন্তু, যে দিকে বিপদের আশঙ্কা নাই ভাবিয়া, নির্ভাবনায় ছিলাম, সেই দিক হইতেই, শত্রু আসিয়া আমার প্রাণসংহার করিল।