চিঠিপত্র (দশম খণ্ড, ১৯৬৭)/দীনেশচন্দ্র সেনকে লিখিত/৩৮

উইকিসংকলন থেকে

৩৮

[সেপ্টেম্বর ১৯০৮]

ওঁ

বোলপুর

প্রিয়বরেষু

 আপনি নানা কাজে ব্যস্ত আছেন তবু আপনাকে আর একবার বিরক্ত করিতে প্রবৃত্ত হইলাম। আপনার প্রতি বোলপুর বিদ্যালয়ের কোনো দাবী নাই এমন কথা বলা চলেনা— সেই জন্যই এই বিদ্যালয় যদি কোনো বিষয়ে বঞ্চিত হইতে পারে— এমন আশঙ্কা ঘটে তবে তাহা দূর করিবার জন্য আপনাকে আহ্বান করিয়া নিষ্ফল হইবনা এরূপ আশা করিতে পারি। দুই সহস্র খণ্ড চারিত্রপূজা গ্রন্থ দুইবারকার বি এ পরীক্ষার্থী এবং অন্যান্য পাঠকদের মধ্যে নিঃশেষিত হইয়া যাওয়া যদি আপনার নিকট সম্ভবপর বোধ হয় এবং যদি দেখেন যে এখনো অনেক বই ভট্টাচার্য্যদের দোকানে বাকি আছে তবে আমাদের বঞ্চিত বিদ্যালয়ের দিকে তাকাইয়া সামান্য কিছুও যদি চেষ্টা করেন তবে আমি তৃপ্তিলাভ করিব। আপনি এমন কথা মনেও করিবেন না যে অরুণকে আমি কিছুদিন বিদ্যালয়ে রাখিয়া পড়াইয়াছিলাম বলিয়া আপনার প্রতি উৎপাত করিবার অধিকার লাভ করিয়াছি। অরুণ বিদ্যালয়ের প্রতি তাহার অন্তরের শ্রদ্ধাদ্বারা আমাদের গুরুদক্ষিণা পরিশোধ করিয়াছে তাহার চেয়ে অধিক আমরা প্রত্যাশা করি না। কিন্তু আপনি নাকি ভট্টাচার্য্যদিগকে বিশেষ নির্ভরযোগ্য বলিয়া আমার নিকট প্রকাশ করিয়াছিলেন এই কারণে এই ঘটনায় আপনার কিছু দায়িত্ব আছেই। আমি সেইটুকুর প্রতি নির্ভর করিব। যদি প্রমাণ হয় যে ভট্টাচার্য্যরা আমাদের সম্বন্ধে ঠিক সাধুব্যবহার করেন নাই তবে আপনাকে কদাচ দোষী করিব এমন মনে করিবেন না— আমি আপনাকে কোনো প্রকারে অন্যায় দোষ বা দুঃখ দিতে ইচ্ছা করিনা। কেবল আপনার সহায়তা প্রার্থনা করি মাত্র। এবং আপনিও বই কাটতির সম্ভাবনা সম্বন্ধে কিরূপ অনুমান করেন তাহাই জানিতে ইচ্ছা করি। এ বিষয়ে আপনি আমার চেয়ে বোঝেন ভাল— এ সম্বন্ধে আপনার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও আছে— সেই জন্যই আপনার শরণাগত হইয়াছি ইহাতে আমার প্রতি বিরক্তিবোধ করিবেন না। ইতি ২৮শে ভাদ্র ১৩১৫

ভবদীয়
শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর