দিয়েছিলে জ্যোক্ষা তুমি দিয়েছিলে জ্যোহ্মণ তুমি, নিয়ে আছি অন্ধকার; দিয়েছিলে ভালবাসা, নিয়ে আছি হাহাকার, নাহি বুকে ফুল-মালা, আছে শুষ্ক ফুল-ডোর। বসন্ত, কোথায় গেলি রাখিয় নিদাঘ ঘোর? দিয়েছিলে বাধি বীণা, ছিড়ে যে ফেলেছি তার; ভ্রমর গুঞ্জর তুলে আসে ন৷ তো কাছে আর। তটিনী উছলি কুলে আনে না মরালী-কুল, ছায়ায় ডাকে না পাখী, কায়ায় ফোটে ন ফুল! গেছিলে প্রদীপ জ্বালি, পোড়ায়েছি ঘর-দ্বার, নাহি মোর কেহ, গেহ প’ড়ে আছে ভস্ম-ভার। প’ড়ে আছে দীর্ণ ভিত্তি প’ড়ে আছে ভিন্ন ছাদ, প্রাঙ্গণে ডাকিছে শিব, চুড়ায় পেচক-নাদ। আসিলে মলয়-স্পশে, গেলে ঝটিকার প্রায়। শত শত ফুলবন নিমেষে দলিয়া পায়। চৌদিকে প্রলয়-মেঘ ভ্রকুটা করিছে কত, কোথ। সে নীলিম মেঘে তারাময় ছায়াপথ। আসিলে স্বপন-শেষে উষার মতন খেলে, গেলে বিহ্যতের মত শত বজ্র পাছে ফেলে। কোথা রাখালের বঁাশী, বিহঙ্গের কল কল, কোথ। সে শিশির-কণ। ফুলে ঘাসে টল টল। কোথ। সে প্রভাত-স্বপ্ন, কোথা সে সন্ধ্যার গান, কোথ। সে পূর্ণিমা-নিশি চেয়ে—চেয়ে অবসান;– মুখ নাই, ছখ নাই, কিশলয়ে কঁপি-কঁাপি। কথা নাই, ব্যথা নাই, ফুলে ফুলে চাপ-চাপি।
পাতা:অক্ষয়কুমার বড়াল গ্রন্থাবলী.djvu/৫২৫
অবয়ব