পাতা:অক্ষয়-সুধা - অক্ষয়কুমার দত্ত.pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিতা— স্বপ্নদর্শন—বিদাবিষয়ক ৫১ দুঃখের সময়ে এক পরম কৌতুক দেখিলাম, কতকগুলি অভিমানী মনুষ্য উভয়পার্যস্থ বৃক্ষতলে উপবেশন করিয়াঅত্যন্ত দত্ত ও ব্যাপকতাসহকারে। মহাকোলাহল ও বিষম কলহ আরম্ভ করিয়াছে। এইরূপ শারীরস্থান, রসায়ন, চিকিৎসা প্রভৃতি অনির্বচনীয় পরম রমণীয় তরু-সমূহ দৰ্শন করিয়া, সাতিশয় সন্তোষ প্রাপ্ত হইলাম এবং অতি শ্রদ্ধাবিশিষ্ট হইয়া। পথিমধ্যে পরমারাধ্যা বিচাদেবীকে কহিলাম,-‘দেবি! আমি তোমার প্রসাদে অগ অনুপম সুখ লাভ করিলাম। ভূ-মণ্ডলে এত নির্ম্মল সুখ-ধাম আর কোথাও নাই। আমার বোধ হয়, এ স্থানে বিশুদ্ধ চিত্ত সচ্চরিত্র ব্যক্তিরাই আগমন করেন, অপর লোকের এখানে আসিবার অধিকার নাই॥” এই কথা শ্রবণমাত্র তিনি বিষম্ন-বদনে কহিলেন, “তুমি যথার্থ বিবেচনা করিয়াছ, এ স্থান ধর্ম্মশীল সাধু ব্যক্তিদিগেরই যোগ্য বটে এবং পূর্বে ইহা তাদৃশই ছিল। তথন কেবল পরোপকারী, তত্ত্বপরায়ণ, পুণ্যাত্মা আচার্য সকলেই এই পরম পবিত্র কাননে উপবেশন করিয়া, অতুল আনন্দ অনুভব করিতেন। কিন্তু এক্ষণে এ বনে নানা বিভীষিকা। উপস্থিত হইয়াছে; পাপ-ৰূপ পিশাচের উপদ্রবে ইহা অতি সঙ্কট স্থান। হইয়া উঠিয়াছে। ঐ দেখ, বিজাতীয়-বেশ ধারী ‘অভিমান’ স্বমস্তক উন্নত ও গ্রীবদেশ বক্র করিয়া, অত্যন্ত উগ্রভাবে সকলের উপর থরতর দৃষ্টিপাত করিতেছে ও স্বকীয় পুত্র দন্ডকে সমভিব্যাহারে লইয়া, মহাশ্লাঘা প্রকাশ। পূৰ্বক সগৰ্ব পদবিক্ষেপ করিতেছে। উহাদের অঙ্গ-ভঙ্গী দেখিয়া কি তোমার বোধ হইতেছে না যে, উহারা মনে মনে বিশ্ব-সংসার তুচ্ছ ভাবিতেছে। তৎপার্ষে দৃষ্টি কর, “ক্রোধ’ নিজ কাস্তা হিসাকে সঙ্গে। লইয়াইতস্ততঃ ধাবমান হইতেছে। উনি ‘অভিমানের’ অত্যন্ত অনুগত। যদি কেহ অভিমানকে স্পর্শমাত্র করে, “ক্রোধ’ তৎক্ষণাৎ উপস্থিত হইয়া, তাহার বৈরনির্যাতন করিতে উদ্যত হয়। এদিকে অবলোকন কর,