পাতা:অগ্নি ব্রহ্মের তত্ত্ব ও আহুতি প্রকরণ - সাগরচন্দ্র কুণ্ডু.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আহুতির প্রকরণ

৫৩ আরাে দেখুন, অল্প শিক্ষিত ব্যাকরণ জ্ঞান বিহীন পুরােহিতগণ ঘটতলার বহু বর্ণ অশুদ্ধযুক্ত ছাপার পুস্তক পাঠ করিয়া যজমান এবং ষজমান পত্নী ও বালক বালিকা দিগকে শ্রাদ্ধাদি কার্যে মন্ত্র বলাইতেছেন, আর তাহারাও মূখতাহেতু সেই সকল মন্ত্র কতই অশুদ্ধ এবং অসম্পূর্ণ রূপে উচ্চারণ করিতেছে তাহার ইয়ত্তা নাই। আমি কয়েক বৎসর পূর্ব্বে আমার স্ত্রীকে, গয়াক্ষেত্রে পিণ্ডদান করাইতে লইয়া গিয়াছিলাম। গয়ালী পুরােহিত তাহাকে মন্ত্র বলাইতে লাগিলেন, কিন্তু সে যে, কত অশুদ্ধ বলিতে লাগিল এবং কত কথা তাহার মুখের মধ্যে রহিয়া গেল, তাহার ইয়ত্তা কে করে? এইরূপে নানাবিধ ধর্ম্ম কর্যে কতই শঙ্কুদোষ ঘটিতেছে তাহার সীমা নাই। ইহাতে কি পুরােহিত প্রভৃতি ব্রাহ্মণগণের এবং যজমানগণের কোনও অপরাধ বােধ হইতেছে? না ইহার প্রতিকারের বিশেষ কোন চেষ্টা হইয়াছে, কি হইতে পারে?

পরমহংসস্বামী বলিয়া গিয়াছেন যে, “অগ্নি ব্রহ্মের এ অভিমান নাই সে, এ স্ত্রী, এ শূদ্র, এ ম্লেচ্ছ, এ যবন ইহারা আমাতে আহুতি দিলে আমার মান যাইবে এবং আমি অপবিত্র হইয়া যাইব।”তিনি ভাবগ্রাহী। ভক্তি ভাবে ( মন্ত্রদ্বারা বা বিনা মন্ত্রে) আহুতি দিলে তিনি তাহা গ্রহণ করিয়া যথা মােগ্য কল্যাণ বিধান করিবেন, অর্থাৎ তিনি মূখ ভক্তগণের অনেক অপরাধই ক্ষমা করিয়া থাকেন। অতএব স্ত্রী শূদ্র প্রভৃতি কাহাকেও অগ্নিতে আহুতি অৰ্পণ করিতে দেখিলে কোন ব্রাহ্মণ তাহাতে কোনও বাধা বিঘ্ন দিবেনা বা অনুষ্ঠাতার প্রতি বিদ্রূপবাণ ক্ষেপণ করিবেন না। কারণ ইহার মধ্যে সকলেরই অম্লাধিক কল্যাণ নিহিত রহিয়াছে। ব্রাহ্মণগণও অগ্নি হোেত্রাদি শুভ- - কার্য্য করিয়া তাহাদের উন্নতি এবং জগতের মঙ্গল করিতেও থাকুন। ইহাতেই জগতের মঙ্গল এবং শান্তি। | ৫ | .