পাতা:অদ্ভুত ফকির - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
দারোগার দপ্তর, ১৯৫ সংখ্যা।

 অতি আগ্রহ সহকারে দামোদর বলিয়া উঠিল, “আজ্ঞে হাঁ হুজুর! যখন ফকির ভিন্ন আর কোন লোক এই কুটীরের ভিতর প্রবেশ করি নাই, তখন আর কে তাহাকে হত্যা করিবে? সেই নিশ্চয় আপনাকে হত্যা করিয়াছে, অর্থাৎ আত্মঘাতী হইয়াছে। কিন্তু যখন পদচিহ্নগুলি দেখিয়া বোধ হইতেছে যে, সেই লোক ঘর হইতে বাহির হইয়া গিয়াছে, তখন আর আমার সে সন্দেহ থাকে না। না হুজুর, আমায় মাপ করিবেন। আমি এ রহস্য কিছুই বুঝতে পারিতেছি না। যাহার জন্য আসিয়াছিলাম, যতদূর সামর্থ্য বলিলাম। এখন আপনি যেমন বুঝিবেন সেইমত কার্য্য করিবেন। আমি অনেক বাজে কথায় হজুরের সময় নষ্ট করিয়াছি।”

 আবদুল কাদের এই সময় তাহাকে বাধা দিয়া অতি কর্কশ স্বয়ে বলিয়া উঠিল, “মিথ্যা কথা বলিয়া হজুরের সময় নষ্ট করিতে আসিয়াছিস? কি পাগলের মত কথা বলিতেছিস্। ফকিরের এমন কি কষ্ট ছিল যে, তিনি আত্মঘাতী হইবেন? কাহার পদচিহ্ন যদি জানিতে না পারিস, তবে মিথ্যা কথা বলিবার প্রয়োজন কি? স্পষ্ট করিয়া বল্, হুজুর, আমার ক্ষমতা নাই, তাহা না করিয়া কতকগুলি মিছা কথা বলিয়া হুজুরের মূল্যবান সময় নষ্ট করিতেছিস্। যা, এখান হইতে দূর হ’। নতুবা তোর অদৃষ্টে অনেক কষ্ট আছে দেখিতেছি।”

 আবদুলের কর্কশ বাক্যে দামোদর জড়সর হইয়া গেল। সে আর কোন কথা না কহিয়া আমার দিকে চাহিয়া রহিল। তাহার অবস্থা দেখিয়া আমার দয়া হইল। আমি আবদুল কাদেরকে বলিলাম, “আবদুল! কেন তুমি দামোদরকে তিরস্কার করিতেছ?