পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R অধ্যাপক মেয়েটির বয়স আঠারো-উনিশ হবে । দেহ নাতিদীর্ঘ, রং আত্মীয়েরা বলবে উজ্জল শু্যাম, শক্রপক্ষ হয় ত’ ‘উজ্জল' কথাট। উঠিয়ে দেবে। মুখে লাবণ্য ও স্নিগ্ধতার লীলালহর যেন খেলে’ বেড়াচ্ছে । চোখ দু’টি বড়, উজ্জল, অথচ দীপ্তিতে মৃগশিশুর কথা স্মরণ করিয়ে দেয় । হাস্তোজ্জল, ক্রীড়াচঞ্চল বিলাসভঙ্গিতে তার গতির মধ্যে যেন একটি নাচের ছন্দ সৌন্দর্য্যে এলায়িত হয়ে চলেছে । উভয়ের মধ্যে কোনও সঙ্কোচ নেই। হাস্যপরিহাসের কলধ্বনিতে বনভূমি তরঙ্গিত করে দু’জনে চলেছে, যেন দু’টি বলাক ডানার ছন্দে নীল আকাশকে গুঞ্জনমুখর করে উড়ে চলেছে । ছেলেটির নাম মুকুমার বন্দোপাধ্যায় । বাপ করতেন ব্যারিষ্টারি রাওলপিণ্ডিতে। রেখে গিয়েছেন বিস্তর টাকা, যাতে লক্ষ্মীর স্বর্ণাসনকে চিরকাল অচঞ্চল করে’ বেঁধে রাখা যায় বাড়ীর দেউড়িতে । শাসন রেখে গেছেন এমন পিচ্ছিল করে’ যে যদি সম্ভব হ’ত তবে লক্ষ্মীকে বিসর্জন দিয়ে অলক্ষ্মীকে আবাহন করতে বেশী সময় লাগত না । ছেলেকে নিজের হাতে শিক্ষা দিয়ে গিয়েছিলেন এবং তার বিশ্বাস ছিল অগাধ ছেলের চরিত্রের উপর । তাই বিষয় আশয় ছেলের উপর সম্পূর্ণ ছেড়ে দিতে তিনি বিন্দুমাত্র দ্বিধাগ্রস্ত হন নি। ছেলেকে তিনি শিখিয়েছিলেন প্রচুর পরিমাণে দেহচর্চা করতে। তাই ছেলের দেহরক্ষার জন্য র্তাকে দেবার্চনা, মাদুলি বা তাবিজের শরণ নিতে হয় নি। নিজে কপৰ্দকহীন অবস্থা থেকে স্ববুদ্ধিবলে ও স্বাবলম্বিতার গুণে প্রচুর ধন ও প্রতিপত্তি অর্জন করেছিলেন। তাই ছেলের মনের উপর নিরস্তর বিধিনিষেধের কড়া পাহারা তিনি বসাতে চাইতেন না। অনেকটা মুক্ত বিহঙ্গের মত স্বভাবের আকাশ-বাতাসে স্বভাবের সহিত স্বাভাবিক দ্বন্দ্বে ও সংঙ্ঘর্ষে ছেলের মন গড়ে উঠবে, বলিষ্ঠ হবে