অন দি ভলগা ১০১ বেরিয়ে পড়লাম। কাজে বেরােবার সময় এই লালনাগারে থােকাকে রেখে যাই। আলেকজেন্দ্রা গার্ডেনে এসে বসে বসে পরের দিনের পড়া পড়ছিলাম আর সঙ্গে সঙ্গেই বইয়ের মার্জিনে নােট টুকছিলাম। বসন্তের প্রথম সময়টা। সবেমাত্র বরফ গলে অদৃশ্য হয়ে গেছে। রাস্তার কলরবও অভিনব বলে মনে হচ্ছিল। তকতকে আবহাওয়ার বুক কেটে কাকের দল পাখা নাড়তে নাড়তে দূরে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। বাতাসে ঘুমভাঙ্গা মাছির আনাগােনা। আশেপাশের বাগান থেকে বসন্তের মিঠে রােদে ক্রীড়ারত শিশুদের হল্লা আর হাসির টুকরো ভেসে আসছিল। হাতে বােনা টুপি আর লম্বা মােজা-পবা শিশুর দল খেলার মাঠে রঙিন কাঠের কোদাল দিয়ে বালি খুড়ছে। আমার থােকাও নীরব নয়। মধুর উত্তাপ আর সূর্যের আলােতে সে তার কচি হাত দুটো একবার খুলছে আবার বন্ধ করছে। আমি অধীর আগ্রহে তার কচি হাতের সেই লীলাযিত গতি লক্ষ্য করছিলাম। বুকে উৎসব আর জীবনের যে আনন্দময় অনুভূতি জেগেছে আমিও তার স্পর্শ থেকে বাদ পড়িনি। বইয়ের একটা পাতা উটিয়ে উপরের দিকে মাথা তুলতেই তার উপর আমার দৃষ্টি পড়ল। আনন্দে হৃদয় আমার লাফিয়ে উঠেছিল••• যে সৌম্য গাম্ভীর্য দেখে প্রথমদিন তার দিকে আকৃষ্ট হয়েছিলাম আজও সেই গাম্ভীর্য দেখেই তাকে দূর থেকেও চিনতে পারলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার সময় করিডরের উপর দিয়ে মাথা সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে, কুঞ্চিত করে সে হেঁটে যেত। আজও সেই ভঙ্গিটা ওর চলায় অব্যাহত আছে। দেখলাম। ওর পায়ের উচু বুট আর গায়ের নীল কোর্তাটাও চিনতে ভুল করিনি। আমার চোখে চোখ পড়তেই সে ভয়ানক লজ্জিত হয়ে পড়ল। বসন্তের
পাতা:অন্ দি ভল্গা.pdf/১০৫
অবয়ব