পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাবালক হইবার পূর্বেই কোন-না-কোন রোগে মারা যাইত। সকলে বলিল, বংশে ব্রহ্মশাপ ঢুকিয়াছে। হরিহর রায়ের মাত। তারকেশ্বর দর্শনে গিয়া এক সন্ন্যাসীর কাছে কঁাদাকাটা করিয়া একটি মাদুলি পান। মাদুলির গুণেই হৌক, বা ব্রহ্মশাপের তেজ দুই পুরুষ পরে কপূরেব মত উবিয়া যাওয়ার ফলেই হৌক, এত বয়সেও হরিহর আজও বঁচিয়া আছে । পথের পাচালী তৃতীয় পরিচ্ছেদ দিনকতক পরে । খুকী সন্ধ্যার পর শুইয়। পডিয়াছিল। বাড়ীতে তাহার পিসিমা নাই, অদ্য দুই মাসের উপর হইল একদিন তাহার মায়ের সঙ্গে কি ঝগড়া-ঝাট হওয়ার পর রাগ করিয়া দূর গ্রামে কোন এক আত্মীয়াবাড়ীতে গিয়া আছে। মায়েরও শরীর ওতদিন বড় অপটু ছিল বলিয়া তাহাকে দেখিবাবও কোন লোক নাই । সম্প্রতি মা কাল হইতে আতুড ঘবে ঢোকা পর্যন্ত সে কখন খায় কখন শোয় তাহা কেহ বন্ড দেখে না । খুকী শুইয়া শুষ্টয়া যতক্ষণ পর্যন্ত ঘুম না আসিল ততক্ষণ পিসিমার জন্য কাদিল । রোজ রাত্রে সে কঁাদে ।। তাহার পর খানিক রাত্রে কাহাদের কথাবার্তা শুনিয়া জাগিয়া উঠিয়া দেখিল, কুডুনীর মা দাই রান্নাঘরের ছেচতলায় দাড়াইয়া কথা বলিতেছে, পান্ডার নেডাব ঠাকুরমা, আরও কে কে উপস্থিত আছেন। সকলেই যেন ব্যস্ত উদ্বিগ্ন। খানিকটা জাগিয়া থাকিয়া আবার শুইয়া পড়িল । বঁাশবনে হাওয়া লাগিয়া শিরশিৱ শব্দ হইতেছে, আঁতুড ঘরে আলো জলিতেছে ও কাহারা কথাবার্তা কহিতেছে। দাওয়ায় জ্যোৎসা পডিয়াছে, ঠাণ্ডা হাওয়ায় একটু পরে সে ঘুমাইয়া পডিল। খানিক রাত্রে ঘুমেব ঘোরে একটা অস্পষ্ট আওয়াজ ও গোলমাল শুনিয়া আবার তাহার ঘুম ভাঙিয়া গেল । তাহার বাবা ঘর হইতে বাহির হইয়া আতুড ঘরের দিকে দৌডাইয়া ব্যস্তভাবে বলিতে বলিতে যাইতেছে-কেমন আছে খুড়ী ? কি হয়েছে ? আঁতুড ঘরের ভিতর হইতে কেমন ধরণের গলার আওয়াজ সে শুনিতে পাইল। গলার আওয়াজটা তাহার মায়ের। অন্ধকারের মধ্যে ঘুমের ঘোরে। সে কিছু বুঝিতে R