পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৩১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—যদি কেউ মারে টারে, কত দুষ্ট ছেলে তো আচে, অমনি মাষ্টারকে বলে দিবি-বুঝলি ? রাত্তিরে ঘুমিয়ে পড়িসা নে যেন ভাত খাবার আগে ! এ তো বাডি নয় যে কেউ তোকে ওঠাবে-খেয়ে তবে ঘুমুদ্বি-নয়তো তাদের বলবি, যা হয়েচে তাই দিয়ে ভাত দাও-বুঝলি তো ? ? সন্ধ্যার পর সে কুণ্ডুদের বাড়ি মনসার ভাসান শুনিতে গেল। অধিকারী নিজে বেহুল সাজিয়া পায়ে ঘুঙুর বঁাধিয়া নাচে-বেশ গানের গলা। খানিকটা BDDBD DDBD DDD DDDBD DBSS Bi BDu DBB iD BBu BB BDBD DB DBSYS যুদ্ধ নাই, তলোয়ার-খেলা নাই, যেন পানসে-পানসে। তবুও আজিকার রাতটি বড় ভাল লাগিল তাহার। এই মনসা-ভাসানোর আসর, এই নতুন জায়গা, এই অচেনা গ্রাম্য বালকের দল, ফিরিবার পথে তাহাদের পাড়ার বঁাকে প্রস্ফুটিত হেন ফুলের গন্ধ ভরা নৈশ বাতাস জোনাকিজলা অন্ধকারে কেমন মায়াময় মনে হয় । • • • রাত্রে সে আরও দু-একটা জিনিস সঙ্গে লইল। বাবার হাতের লেখা একখানা গানের খাতা, বাবার উদ্ভট শ্লোকের খাতাখানা বড় পেটরাটা হইতে বাহির করিয়া রাখিল-বড় বড় গোটা গোটা ছাদের হাতের লেখাটা বাবার কথা মনে আনিয়া দেয়। গানগুলির সঙ্গে বাবার গলার সুর এমনভাবে জড়াইয়া আছে যে, সেগুলি পড়িয়া গেলেই বাবার সুর কানে বাজে। নিশ্চিন্দিপুরের কত ক্রীড়ারক্রান্ত শান্ত সন্ধ্যা, মেঘমেদুর বর্ষামধ্যাহ্ন, কত জ্যোৎস্না-ভরা রহস্যময়ী বাত্রি বিদেশ-বিভূ-এর সেই দুঃখ-মাখানো দিনগুলির সঙ্গে এই গানের স্নার যেন জড়াইয়া আছে--সেই দশাশ্বমেধ ঘাটের রাণা, কাশীর পরিচিত সেই বাঙালি কথকঠাকুর। সৰ্বজয়ার মনে একটা ক্ষীণ আশা ছিল যে, হয়ত ছেলে শেষ পর্যন্ত বিদেশে যাইবার মত করিবে না। কিন্তু তাহার অপু যে পিছনের দিকে ফিরিয়াও চাহিতেছে না । সে যে এত খাটিয়া, একে-ওকে বলিয়া কহিয়া তাহার সাধ্যমত যতটা কুলায়, ছেলের ভবিষ্যৎ জীবনের অবলম্বন একটা খাড়া করিয়া দিয়াছিল --ছেলে তাহ পায়ে দলিয়া যাইতেছে--কি জানি কিসের টানে ! কোথায় ? তাহার স্নেহদুর্বল দৃষ্টি তাঁহাকে দেখিতে দিতেছিল না যে, ছেলের ডাক আসিয়াছে বাহিরের জগৎ হইতে । সে জগৎটা তাহার দাবী আদায় করিতে তো ছাড়িবে না-সাধ্য কি সর্বজয়ার যে চিরকাল ছেলেকে আঁচলে লুকাইয়া রাখে ? দিতে দিতে বলিল-বাড়ি আবার শীগগির শীগগির আসৰি কিন্তু, তোনের ইতুপুজোর চুটি দেবে তো ? R.