পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাজিপুথি দেখে খাতাঞ্চিমশায় সেটা জেনেছিলেন, আর মনে-মনে কর্ণবেধের একটা মোটামুটি খরচের হিসেবও করে রেখেছিলেন। তিনি বললেন, তা তোমার যখন ইচ্ছে তখন তাই হবে। এখন একটু বুঝে-মুঝে চল, সাত মাসে মেয়ের অন্নপ্রাশনটা দিতে হবে তো আমায় ? অন্নপ্রাশন এল, সেটা ষষ্ঠিমার্কণ্ডের পুজো নমো-নমো করে সেরে । দিয়ে, খাতাঞ্চিমশায় ছমাসের হিসেবনিকেশ লিখতে বসলেন । কিন্তু ষষ্ঠিমার্কও দুজনে সোনার অন্নপ্রাশনের নৈবিদ্যি খেয়ে এমনি খুশি হয়েছিলেন যে, সোনা দুই বছরে পড়তেই খাতাঞ্চির ঘরে একেবারে মউরে চড়ে জোড়া কার্তিক এসে উপস্থিত! সোনার মা তুই ছেলের নাম দিলেন আঙুটি পাণ্ডুটি, আর এক খরচে দুই ছেলের সেটের থেকে পৈতে এমন কি বিয়ে পর্যন্ত চলে যাবে জেনে, খাতাঞ্চিমশায় এবার বরং খুশিই হয়ে ভুলে সোনাতোনকে ডবল পয়সা দিয়ে ফেললেন । জোড়া কার্তিকের মউর ফুটে খাতাঞ্চির ঘরে সোয়ার নামিয়ে দিয়ে কৈলাসে উড়ে পালাল। কিন্তু সেইদিন থেকে সিঙ্গির মতে বাঁকড়া মাথা ‘বোহিম’ কুকুরটা মউর পালকের গন্ধে-গন্ধে এসে খাতাঞ্চির দরজায় যে ধন্না দিয়ে বসল, আর যাবার নামটি করলে না। খাতাঞ্চি সেটাকে তাড়াতে হাতের কলমটা চড়ে যতবার মারলেন ততবারই সে মুখে করে কলমটা তুলে এনে রায়মশায়কে দিয়ে গেল। বোহিম যে কাজের কুকুর সেটা রায়মশায় বুঝলেন । তিনি কুকুরটাকে চিঠি বইতে বাজার থেকে মাছের খালুই মুখে করে আনতে আর সন্ধ্যেবেলা চক্কোত্তিমশায়ের বাড়িতে দাবা খেলতে যাবার সময় সঙ্গে লণ্ঠন নিয়ে যেতে শিখিয়ে, তাকে ভাত দেবার খরচটা পুষিয়ে নিতে লাগলেন। তাছাড়া সে ছেলেদের খেলা দেওয়া, রাত্রে দরজায় পাহারা দেওয়া, এমনি নানা কাঙ্ক দিতে লাগল, পাতের খেয়ে সেই কুকুর। ছেলে বাড়ল কিন্তু চাকরচাকরানী আর একটিও বাড়ারার দরকার হল না । বোহিম আসাতে, >>>