পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চকা তাদের দিকে খানিক কটমট করে চেয়ে থেকে সুবচনীর হাসকে বললে –‘তুমি গিয়ে হাড়গিলে চরে চুপচাপ বসে থাকে, আমি কেবল হংপাল বুড়ো-আংলাকে নিয়ে নাটবাড়িতে যাব, যদি কেউ চুয়োদের তাড়াতে পারে তো এই ছোকরা ’ বলে চকী হাড়গিলের সঙ্গে রিদয়ের আলাপ করে দিলে । টিকটিকির মতো বুড়ো-আংলাকে দেখে হাড়গিলে একবার গলার থলি ফুলিয়ে খানিক হেলে-ফুলে হেসে নিলেন । তারপরে বাপ করে ঠোঁটে করে রিদয়কে আকাশে ছুড়ে-ছুড়ে লোফালুফি শুরু করে দিলেন, রিদয় ভয়ে চিৎকার করতে লাগল। চকা তাড়াতাড়ি ছুটে এসে বললে ‘জং বাহাদুর করেন কী ! ওটা মানুষ —ব্যাঙ নয়, ওকে ছাডুন, গেল যে ’ মানুষ ! বলেই হাড়গিলে মাটিতে রিদয়কে নামিয়ে দিয়ে দু-চারবার ডানা আপসে নৃত্য করে বললেন –বুরুঞ্জিতে ঠিক তো লিখেছে, অঙ্গুষ্ঠপ্রমাণ এই মহাপুরুষ এসেছেন ঠিক ভূতচতুর্দশীতেই, আর ভয় নেই, আমি এখনি গিয়ে নাটবাড়ির সকলকে এ-খবর দিচ্ছি। জয় গণেশের জয়’ –বলে হাড়গিলে নাটবাড়ির দিকে উড়ে গেল । হাড়গিলের ব্যবহারে রিদয় ভারি চটে ছিল, সে গেী হয়ে চকণর পিঠে উঠে বসল। নাটবাড়ির চুড়োয় একখানা র্যাতার মতো পাথর, তার মাঝ-খানটায় রাজাদের ধ্বজি গাড়বার একটা গর্ত, সেই গর্তে খান দুই পুরোনো হোগলা পাতার মাছর বিছানো, তার উপরে কাঠকুটো আর পালকের তোশক, একপাশে কোন কালের রানীদের ছেড়া কাপড়ের এক টুকরো জরির আঁচল মাতুর-ছেড়ার মধ্যে ঝিকমিক করছে, কতকালের মরচে-ধরা একটা খিল-ভাঙা তাল, একটা কলঙ্ক-পড়া রুপোর চুষিকাঠি, ভেঁাতা একটা শরের কলম, ছেড়া একপাটি জরির লপেটা জুতো, আধখানা পরকলা লাগানো শিংএর চশমা একট, গেল বছরের ফাট চিনের পেয়ালার মতে গোটাকতক ডিমের খোলা, পেটটা ফুটো-করা একটা আধমরা \ლ)ჯ8