পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

না-হয় কিছুকাল পাঠান বাদশার একজন তালুকদার হয়েই কাটালেম ।’ ভীমসিংহের তুই চক্ষে জল পড়তে লাগল ; তিনি মহারানার দুটি হাত ধরে বললেন, ‘হায় লছমন, মনে বেশ বুঝেছি আর উপায় নেই, তবু আমার একটি অনুরোধ আছে। তুই বৎসর বয়সে যখন তোর ম। গেলেন বাপ গেলেন, তখন আমিই তোকে ছেলের মতো বুকে টেনে নিয়েছিলেম ; সমস্ত বিপদ-আপদ, রাজ্যের সমস্ত ভাবনা-চিন্তা তোরই হয়ে অকাতরে সহ করেছিলেম। আজ আমার একটি অনুরোধ রক্ষ কর বংস ৷ সাতদিন সময় দে ! তামি এই শেষবার চিতোর উদ্ধারের চেষ্টা দেখি ! এই সাতদিন যেন পাঠানের সঙ্গে সন্ধি না হয়, এই সাতদিনে যেন আমার হুকুম মহারানার হুকুম জেনে সকলে মন্ত্য করে ' লক্ষ্মণসিংহ বললেন, “তথাস্তু । সেই দিন থেকে ভীমসিংহের হুকুমমতো এক-একজন রাজপুত সর্দার পাঠানের সঙ্গে যুদ্ধে যেতে লাগলেন । প্রতিদিন খবর আসতে লাগল— আজ অমুক রাজকুমার যুদ্ধে প্রাণ দিলেন, তাজ অমুক সামন্ত বন্দী হলেন— চিতোরের ঘরে-ঘরে হাহাকার উঠল! সেই হাহাকার, সেই হাজার-হাজার তানাথ শিশু আর বিধবার ক্রন্দন, পদ্মসরোবরের মাঝখানে, যেখানে রাজরানী পদ্মিনী শ্বেতপাথরের দেবমন্দিরে পূজায় বসেছিলেন, সেইখানে পেীছল! পদ্মিনী দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে পুজা সাঙ্গ করলেন । তার কোমল প্রাণ সেই সব দুঃখী পরিবার অনাথ শিশুর জন্তে সারা দিন, সারা সন্ধ্য। কেবলই কাদতে লাগল । ভীমসিংহ যখন মহলে এলেন তখন পদ্মিনী তুই হাত জোড় করে বললেন, ‘প্রভু, আর কতদিন যুদ্ধ চলবে ? ভীমসিংহ বললেন, ‘তিন দিন মাত্র। কিন্তু যুদ্ধে আর কোনো ফল নেই, রাজপুতের প্রাণে সে উৎসাহ আর নেই। এখন উপায় কী ? সূর্যবংশের মহারানাকে এইবার বুঝি পাঠান-বাদশার তালুকদার হতে হল ! }} a