সেদিন বর্ষাকাল, মেঘের ঘটা আরাবল্লী পর্বতের শিখরে কাজলের মতো ছায়া ফেলেছে। গ্রামের উপর খেতের উপর দিয়ে আলে|আঁধারের খেলা চলেছে। দুই রাজকুমার শিকারে বেরিয়েছেন, রাজরানীতে মহলের ভিতর একলা আছেন । সন্ধ্যা হল— রাজকুমারের ঘরে ফিরছেন না, রানীমা এক-একবার খোলা জনিলায় চেয়ে দেখছেন । দেখতে-দেখতে পশ্চিম মেঘের তীরে একটু-খানি সোনার ঢেউ খেলিয়ে সূর্যদেব অস্ত গেলেন। রাত্রির অন্ধকার মেঘের অন্ধকারে গাঢ়তর হয়ে এল। রানীমা রাজার সঙ্গে কথা বলছেন আর বারে-বারে জানালীর পানে চেয়ে দেখছেন । রাজ বললেন, ‘তোমায় আজ আনমনা দেখছি যে ? ‘কে জানে প্রাণটা কেমন করছে, বলে রানীম উঠে গেলেন । দাসী ঘরে এসে প্রদীপ দিয়ে গেল । টুপটাপ কবে ক্রমে বড়ো-বড়ো ফোটায় বৃষ্টি নামল । রানীম, মলিন মুখে ফিরে এসে বললেন, ‘এরা যে দুভায়ে সকাল থেকে শিকারে গেল, এখনো এল না কেন ? রান বলে উঠলেন, সে কী ? এখনো এর ফেরেনি ? এই ঝড়-বৃষ্টিতে দুজনে কোথায় রইল ? বলতে-বলতে কেল্লার উঠানে লোকের কোলাহল শোনা গেল। তখন মেঘ কেটে গিয়ে চন্দ্রোদয় হচ্ছে ; রাজ রানী দেখলেন জন কয়েক গ্রামবাসী কাকে যেন ধরাধরি করে নিয়ে আসছে। একজন দাসী তাড়াতাড়ি এসে খবর দিয়ে গেল, রানীম, দেখুন গিয়ে বড়োকুমার অজিম বাহাদুরের কী হয়েছে। বলতে-বলতে লোকজন ধরাধরি করে রাজকুমারকে নিয়ে উপস্থিত হল । রাজ রানী শুনলেন, পাহাড়ের উপর শিকার করতে গিয়ে মুঞ্জ বলে যে ভীল সর্দার, তার ছেলের সঙ্গে সুজন বাহাছরের হরিণ নিয়ে ঝগড়া হয়, ক্রমে লড়াই বাধে। বড়োকুমার তাকে রক্ষা করতে গিয়ে মাথায় চোট পেয়েছেন । রানা জিজ্ঞাসা করলেন, “আর সুজন সিং কোথায় গেলেন । লোকজনেরা মাথ চুলকে বললে, 'অজ্ঞে তিনি ভালো আছেন, 》○)
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৪৩
অবয়ব