বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রানী শ্লেষ ক'রে বললেন, “তোমার গল্প যতটা চলবার চলেছে, এ কোণ আর ও কোণ, তার বেশি আর চলবে না, গল্পের পা আছে না কি ষে চলবে ?”

  • আচ্ছ, পা নেই তো চলুক উড়ে এবারে গল্প” বলেই রাজা শুরু করলেন– “ওই যে পাখি পড়েছিল না-দেখা পাখির ভালোবাসায়, ওই যে সে নাচন-পাখি চলেছিল এ কোণ থেকে ও কোণ, ওই যে বলেছিল বীণার তারে ডানার ঝাপটা দিয়ে দিয়ে— এসো না, এসে। না, সেই পাখি আর সেই বীণা— তাদের কথা আর মনে পড়ল না, রাজা খুশি হলেন এক আনি রানী পেয়ে, আর আনি তিনি নাতি পেলেন, স্বর্গে দেবার কত বাতি জ্বলল, ঘরে ঘরে অন্দরে সদরে, তবে আনি খুশি হলেন কি না, তা তার মুখ দেখে বোঝাই গেল না! তিনি একেবারে গম্ভীর হয়ে পড়লেন মহারানী হওয়া মাত্রেই । রাজা ভাবেন— এ কি সেই সেদিনের যাকে আনি বললে মানেই বুঝত না, বলত, কী আনবে ?— সোনার ময়ূর না পাল্লার গাছে যে মুক্তোর ফল খায় পাখি, তাই ? এ কি সেই না আর কেউ ?

আর রানী ভাবেন— এ কী আমার সেই রাজা, সাত সমুদ্র পারে যেতে যে ডরাত না, একি সেই না আর কেউ গির্দা ঠেসান দিয়ে পড়েই আছে, নড়েও না, চড়েও না ? এ খোজে সেই সেদিনের রাজা ও খোজে সেই সেদিনের রানী— পায় না ! মস্ত বড়ো নতুন রাজবাড়ি । একখানি পাত্তর তার পুরোনো নয়— সব নতুন। ঝাড় লণ্ঠন গালচে ফুলচে নতুন নতুন বদল হচ্চে দিনে দিনে ; পুরোনোর একটি কুটোও পাওয়া যায় না সেখানে। তারই মধ্যে রাজা-রানীর চুল পাকল খুঁজে খুঁজে সেই পুরোনো দিনের রাজপুত্র আর রাজকন্যাকে ! রাজপুরী ভরে উঠল নতুন নতুন লোকজন আত্মীয়স্বজনে ; পুরোনোর স্থান হ’ল না সেখানে একটুও । হঠাৎ একদিন রাজার কী হ’ল, আধারাতে তিনি স্বপ্নের ঘোরে বললেন– “আচ্ছ, সে ঘরটা ?” রানী ভয় পেয়ে বললেন, “কোন 8२●