পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদায় করে দিলেন। তারা দুই জনে দল ছাড়া হয়ে একজন গেল গোয়াল-ঘরে বাধা পড়তে, একজন গেল ধোবার বাড়ি মোট বইতে । “পয়লা তারিখে নল বনে নীল রাজা কাটা ল্যাজে জরির ফুপি আর ময়ূরের পালকের এক রাখী বেঁধে গোম্স মুখ করে ল্যাজ ভাসান দেখবার জন্য ঘাড় উচু করে রাঙা মাটির সিংহাসনে উঠে বসলেন। তখন সন্ধ্যা হয়-হয়। নদীর জলে যেন রক্তের ঢেউ খেলছে। ধারে ধারে শর বনগুলোর মধ্যে জানোয়ারের গুড়ি মেরে বসে রাজার দিকে চেয়ে রয়েছে— কখন কী হুকুম হয় ! এমন সময়ে শেয়ালপণ্ডিত রাজ্যের খ্যাকশেয়াল নিয়ে সভায় উপস্থিত হয়ে হাত জোড় করে দাড়ালেন । নীল রাজা এ পর্যন্ত কারে সঙ্গে কথা বলেননি, পাছে মুখ খুললে শেয়ালের রা ধরা পড়ে যায়। ইশারায় শুধোলেন— কী হল ? পণ্ডিত নিজের ঝাটা ল্যাজ নিশেনের মতো আকাশে তুলে হেঁকে বললেন– হুয়া ! অমনি চারিদিকে শেয়ালের পাল ডেকে উঠল— হুয়া হুয়া ! রাজা তাদের ল্যাজের দিকে আঙুল দেখিয়ে ইশারা করলেন-কী হুয়া ?— কিছুই হয়নি । কিন্তু শেয়ালপণ্ডিত কেবল বলতে লাগল— হুয়া হুয়া হুয়া উচ্চা হুয়া উচ্চাহুয়া ! “এক শেয়াল ডাকলে সব শেয়ালকেই ডাকতে হবে— এটা বিধাতার নিয়ম। ডাকবার জন্তে রতার প্রাণ আইটাই করতে লাগল, তবু সে দু'হাতে মুখ চেপে বসে রইল দেখে শেয়ালপণ্ডিত দল-বলকে ইশারা করলেন। ঠিক সেই সময় সূর্যও অস্ত গেলেন । অন্ধকারে শেয়ালের পাল চারি দিক থেকে ডেকে উঠল— হুয়া হুয়া হোতা হুয়া হোতা হুয়া ! রতার মুখ আর বন্ধ থাকল না। সে মোটা গলায় চেচিয়ে উঠল— ক্যা হুয়া ক্যা হুয়া ? না হুয়া না হুয়া !

  • আরে শেয়াল!” -ব’লে ভোম্বলদাস অমনি তার ঘাড়ে লাফিয়ে পড়ে এক থাপ্পড়ে রতাকে সিংহাসন থেকে জলে ফেললেন । সেখান থেকে বাঘ'তাকে মুখে করে তুলে দেখালে— নীল রঙ ধুয়ে বেরিয়েছে— ল্যাজ কাট রত শেয়াল, রাজ মিস্ত্রি !

8లి: