পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছেলে-মেয়েদের গ্রহ-নক্ষত্র, জল-স্থল, জন্তু-জানোয়ার, আকাশ-বাতাস, গাছপালা, দেশবিদেশের কথা বেশ করে জানিয়ে দেবার জন্যে বইগুলো তখন ছিলই না । বই লিখিয়েও ছিল না হয়তে, কাজেই খানিক জানি তখন নিজে নিজে, দেখে কতক, ঠেকে কতক, শুনে কতক, ভেবে ভেবেও বা কতক । আমি দিচ্ছি পরীক্ষা তখন আমারই কাছে, কাজেই পাসই হয়ে চলেছি জানাশোনার পরীক্ষাতে । আমাদের শাস্তিনিকেতনের জগদানন্দবাবুর ‘পোকমাকড়' বই কোথায় তখন, কিন্তু মাকড়সার জালমৃদ্ধ মাকড়সাকে আমি দেখে নিয়েছি। আর জেনে ফেলেছি যে, মাকড় মরে গেলে ধোঁকড় হয়ে খাটের তলায় কম্বল বোনে রাতের বেলা । মাছের কথা’ পড়া দূরে থাক, মাছ খাবারই উপায় নেই তখন, কাটা বেছে দিলেও । কিন্তু এটা জেনেছি যে, ইলিশ মাছের পেটে এক থলিতে থাকে একটু সতীর কয়ল, অন্য থলি ক’টাতে থাকে ঘোড়ার ক্ষুর, বামুনের পৈতে, টিকটিকির ল্যাজ এমনি নানা সব খারাপ জিনিস যা মাছ-কোটার বেলায় বার করে না ফেললে খাবার পরে মাছটা মুশকিল বাধায় পেটে গিয়ে। জেনেছি সব রুই মাছগুলোই পেটের ভিতরে একটা করে ভুই-পটকা লুকিয়ে রাখে । জলে থাকে বলে পটকাগুলো ফাটাতে পারে না; ডাঙায় এলেই তারা মরে যায় বলে পটকাও ফাটাতে পারে না নিজের । সেজন্য মাছের দুঃখ থাকে, আর এইজন্তেই মাছ কোটার বেলায় আগে-ভাগে পটকাট মাটিতে ফাটিয়ে দিতে হয়। না হলে মাছ রাগ করে ভাজা হতে চায় না দুঃখে পোড়ে, নয় তো গলায় গিয়ে কাটা বেঁধায় হঠাৎ ৷ কালোজামের বিচি পেটে গেলেই সর্বনাশ, মাথ ফুড়ে মস্ত জামগাছ বেরিয়ে পড়ে, আর কাগ এসে চোখ দুটোকে কালোজাম ভেবে করে খায়। জোনাকি —সে আলো খুঁজতে পিদুমের কাছে এল তো জানি লক্ষণ খারাপ, তখন তারা’ ‘তারা’ না স্মরণ করলে ঘরেব দোষ কিছুতেই কাটে না । বটতলার ছাপা ‘হাজার জিনিস বইখানার চেয়েও মজার একখানা বই— তারই পাণ্ডুলিপির মাল-মশলা সংগ্রহ করে চলেছে বয়েসটা আমার তখন। বড়ো হয়ে ছাপাবার মতলবে কিম্বা শর্ট-হ্যাও রিপোর্টের মতে ছাট অক্ষরে সাটে টুকে নিচ্ছে সব কথা— এ মনেই হয় না : আজও যেমন বোধ করি— যা কিছু সবই— এরা আমাকে আপনা হতে এসে দেখা দিচ্ছে — ধরা দিচ্ছে এসে এর 1 খেলতে আসার মতো এসেছে, S