পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হলে আরো ভালো হয় দু বন্ধুতে মিলে বলাকওয়া করতুম। সেই সময়ে দেখেছি র্তার ড্রইং । ভারি মুন্দর। ভারতবর্ষের নানা জায়গা ঘুরেছেন ; উদয়পুর জয়পুরের কতকগুলি স্কেচ করেছেন, লোভ হয় দু-একখানির উপর। অনেক সাহেব এ দেশের স্কেচ করেছে, ছাপিয়েছেও দু-একজন ; কিন্তু তাদের স্কেচগুলিতে কেমন যেন বিদেশের ছাপ থাকত, আর থর্নটনের অ্যালবাম যেন ভারতবর্ষের হুবহু ছবি। মাঝে মাঝে তার ফ্ল্যাটেও যেতুম ; তেতলার ফ্ল্যাট, গোল সিড়ি দিয়ে ঘুরে ঘুরে উপরে উঠে চাপরাসিকে জিজ্ঞেস করতুম, সাহেব আছেন ? চাপরাসি উত্তর দিতে ন-দিতেই ও দিক থেকে ঢিলেচাল পাজাম পরে সাহেব এসে উপস্থিত হতেন, তার পর দুজনে বসে কত গল্প, কত হাসি, কত মজাই না করতুম। প্রাণখোল। হাসি ছিল তার । তাদের আট ক্লাব ভেঙে গেলে পর ক্লাবের বোর্ড আলমারি আমাকে তিনি দিয়েছিলেন । বললেন, ‘কী হবে আর এ-সব দিয়ে, তুমিই নিয়ে যাও, কাজে লাগবে।’ আমাদের আর্ট সোসাইটির উনি একজন বড়ে উৎসাহী সভ্য ছিলেন। তাই নয়, বড়ো খদেরও ছিলেন। নন্দলালের অনেক ছবি উনি কিনেছেন । একবার নন্দলালের সতী” ছবিখানি কিনেছেন। সে সময়ে আমরা ঠিক করি, ভালো ভালো ছবিগুলি ছাপিয়ে বাজারে ছড়িয়ে দেব। করিয়েওছিলুম কিছু, খুব ভালো হয়েছিল। তা সেই “সতী” ছবিখানি ও আর খানকয়েক ছবি, ভালো করে প্যাক করে জাপানে পাঠানো হল ছাপাবার জন্য । ওকাকুর, টাইকান, ওঁরা ব্যবস্থা করে দিলেন । ভালো কোম্পানিতে ছবিগুলি ছাপা হয়ে কিছুকাল বাদে তা ফেরত এল । থর্নটনের ‘সতী’ও এল । তিনি ছবির প্যাক খুলে ছবিটি বের করে দেখেন, ছবি আর চিনতেই পারেন না । খবর পাঠালেন ‘শিগগির এসো, কাণ্ড হয়ে গেছে, সতী কিরকম বদলে গেছে। সেই আগের সতী আর নেই।’ তাড়াতাড়ি গেলুম। কী ব্যাপার ? গিয়ে দেখি, তাই তে, মনে হয় আগুনে পুড়ে সতীর গায়ের রঙ যৈন ছাই হয়ে গেছে। রুপো পুরোনো হয়ে গেলে যেমন হয় তেমনটি ! সাহেব বললেন, “এ কেমন হল ? বললুম, রঙ বিগড়ে গেছে। কেন গেছে তা কী করে বলব বলে ? সাহেব বললেন, “এ সারানো যাবে না ? বললুম, ন, এ আর সম্ভব নয়। সাহেবের মন খারাপ, র্তার সতীর এমন দশা হয়ে গেল। তখনকার ছবি আমরাই বেশির ভাগ কিনে রাখতুম। সতীটির উপর খুব লোভ ছিল। সাহেব কিনে নিলে, কী আর २७१