পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহেব তার কাছ ধ্যান শেখে, যোগ শেখে। সারাক্ষণ কেবল ওই করছে। আমি বললুম, এ তে ভালো কথা নয়। যত সব বাজে সাধুসন্নোসীর পাল্লায় পড়ে না ঠকেন শেষ পর্যন্ত একদিন বিকেলে সেই সাধু আমার আপিসঘরে এসে উপস্থিত। বললে, “এই নাও পাক হরিতকী। একটি খেলে যৌবন অক্ষুণ্ণ থাকবে, বয়স বাড়বে না, চুল পাকবে না – কত কী। ব’লে লাল বকুলবিচির মতো একটা কী হাতে গুজে দিলে । সন্ন্যাসী চলে যেতে আমি সেটি পকেটে ফেলে রাখলুম। ভাবলুম, খেয়ে শেষে মরি আর কি ! খানিক বাদে হাভেল সাহেব এলেন আমার ঘরে ; বললেন, সন্ন্যাসী এসেছিল তোমার কাছে ? কী দিল তোমায় ? আমি পকেট থেকে সেটি বের করে বললুম, এইটি ? সাহেব বললেন, "আমায়ও একটা দিয়েছিল। আমি খেয়ে ফেলেছি। বললুম ‘করেছ কী তুমি ? না জেনে শুনে তুমি খেলে কী বলে ? খেয়ে ফেলেছেন, কী আর হবে। মনট কেমন খারাপ হয়ে গেল । বাড়ি ফেরবার পথে সেই পাক হরিতকী পকেট থেকে বের করে রাস্তায় ফেলে দিলুম। কী জানি চিরযৌবনের লোভ যদি-ব জাগে সাহেবের মতো ! এমনি কতরকম চরিত্রের লোক নজরে পড়ত তখন । S ૨ হাভেল সাহেবদের একটা সোসাইটি ছিল জনকয়েক সাহেব মেম আর্টস্ট নিয়ে । সন্ধেবেল আর্টস্কুলেই তার ঘণ্টা-দুয়েক কাজ করত ; আলোচনা সমালোচনা হত, মাঝে মাঝে খাওয়াদাওয়াও চলত, অনেকটা আট ক্লাব গোছের । মার্টিন কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার থর্নটন সাহেবই দেখাশোনা করতেন । র্তার উপরেই ছিল আর্ট ক্লাবের সব-কিছুর ভার । চমৎকার আঁকতেও পারতেন তিনি। অমায়িক সৎ লোক ছিলেন, মহৎ প্রাণ ছিল তার । অমন সাহেব দেখা যায় না বড়ে । আমার সঙ্গে খুব জমত । সেই থেকেই আমার সঙ্গে তার আলাপ | পরে আমাদের সোসাইটির সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন। আমি যখন আর্টস্কুলে, তিনি আসতেন আমার কাছে প্রায়ই ; আবার ডেকেও পাঠাতেন কখনো কখনো । চারটের পরে যে তুম তার আপিসে। খুব বিশ্বাস ছিল আমার প্রতি ; টেবিলের দেরাজ থেকে তার আঁকা নানারকম স্থাপত্যকর্মের প্ল্যান বের করে আমায় দেখাতেন, পরামর্শ চাইতেন । কোনটা কিরকম శి$9