বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভিতরে রাধাকে রেখে, আমি যেন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তাকে দেখতে পারি। মন্দিরের নীচে একটা চাবি থাকবে, সেটা ঘোরালেই আমার রাধা ঘুরে ফিরে জাড়াবে ।’ সে এনে দিলে চমৎকার একটি কাঠের মন্দির তৈরি করে। তাতে রাধিকাকে প্রতিষ্ঠা করে অলকের মার হাতে দিলুম ; বলুলুম, রেখে দাও একে ৰত্নে তুলে । তিনি মন্দিরস্থদ্ধ রাধাকে অতিযত্নে তুলে রাখলেন তার কাপড়ের আলমারিতে। মাঝে মাঝে শখ হয়, বের করে দেখি, কেউ এলে দেখাই, আবার রেখে দিই। • তার পর অনেক বছর কেটে গেছে। বহুদিন রাধাকে দেখি নি, মনেও ছিল না তেমন। সেদিন মিলাড এসেছে। তার সঙ্গে কথায় কথায় মনে পড়ল আমার রাধিকার কথা। মিলাডা কেবল ভিনাস ভিনাস করে, ভাবলুম দিই একবার তার দর্প চূর্ণ করে। বীরুকে ডেকে বললুম, আন তো বীরু, আমার আধিকাকে একবার।’ বীরু ভিতরে গিয়ে বললে পারুলকে। পারুল খুজে পায় না কোথাও সেই মন্দিরটি। শুনে আমি নিজে গেলুম ভিতরে ; বললুম, ‘সেকি কথা, রাধিক যাবে কোথায় ? আমি নিজে রেখেছি এই আলমারিতে, দেখো ভালো করে।’ মনে মনে ভয় হল, কেউ নিয়ে যায় নি তো ! ভাবতেই বুকটা ধড়ফড় করে উঠল। অলকের মার অস্থখ, কথা সব ভুলে যান ; তাকে জিজ্ঞেস করি। তিনি বলেন, ‘দেখে খুজে, ওখানেই তো রেখেছিলুম। চাবি নিয়ে পারুল আলমারি খুলে তচনচ করলে ; কোথাও নেই মন্দিরটি। পারুল নীচের তাক থেকে বের করলে কাঠের বাক্স থেকে একটি জাভানীজ কাঠের পুতুল । মাদাম টোন একবার এনেছিলেন জাভার নানারকম সব জিনিস, ‘বিচিত্রা হলে তার প্রদর্শনী হয়। তার মধ্যে দুটি পুতুল ছিল ; রাজকুমারী আর তার সর্থী। দাদা কিনলেন রাজকন্যাটি, আমি কিনলুম সখীটি। সেও ভারি কুন্দর ; লাল শাড়িটি পর, খোপাটি বাধা, তাতে ফুল গোজা । পারুল সেইটি হাতে নিয়ে বললে, “এইটেই কি ? আমি বললুম, ‘আরে না । এ হল রানীর দ্বাসী। রাধিকা হল রানী, তার কেন এমন চেহারা, এমন সাজসজ্জা হবে! খোজে, খোজো, নামাও সব কাপড়চোপড় জিনিসপত্তর আলমারি থেকে । এখানেই আছে, স্বাবে কোথায় ।" জিনিসপত্রসব নামানো হল । না, কোথাও নেই সেই রাধিক । হাত দিয়ে হাতড়ে হাতড়ে থাকগুলি সব দেখি ৷ কপাল দিয়ে আমার ঘাম ঝরতে লাগল। শেষে, এক কোণায় একটি বেশ বড়ো

ዓ8 .