পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জিজ্ঞেস করি, কোথায় তোমার আটকাচ্ছে। সে বলে, ‘বুঝতে পারছি নে ঠিক, তবে এইটে বুঝছি এতে একটা অভাব রয়ে গেছে। এই কথা বলে, ছবি দেখে আর ঘাড় দোলায়। একদিন হল কী, এসেছে সকাল বেলা, স্ট ডিয়োতে ঢুকেছে—তখন শিউলি ফুল ফুটতে আরম্ভ করেছে, বাড়ির ভিতর থেকে মেয়েরা থালা ভরে শিউলি ফুল রেখে গেছেন সে ঘরে, হাওয়াতে তারই কয়েকটা পড়েছে এখানে ওখানে ছড়িয়ে—টাইক্কান তাই-না দেখে ফুলগুলি একটি একটি করে কুড়িয়ে হাতে জড়ো করলে। আমি বসে বসে দেখছি তার কাণ্ড । ফুলগুলি হাতে নিয়ে ছবির উপরে ঢাকা দেওয়া কাপড়টি একটানে তুলে ছবির সামনে জমিতে হাতের সেই ফুলগুলি ছড়িয়ে দিলে, দিয়ে ভারি খুশি । থালা থেকে আরো ফুল নিয়ে ছবির সারা গায়ে আকাশে মেঘে গাছে সব জায়গায় ছড়িয়ে দিলে। এবারে টাইক্কানের মুখে হাসি আর ধরে না। একবার করে উঠে দাড়ায়, দূর থেকে ছবি দেখে, আর তাতে ফুল ছড়িয়ে দেয় । এই করে থালার সব কটি ফুলই ছবিতে সাজিয়ে দিলে । সে যেন এক মজার খেলা। ফুল সাজানো হলে ছবিটি অনেকক্ষণ ধরে দেখে এবারে ফুলগুলি সব আবার তুলে নিয়ে রাখলে থালাতে। শুধু একটি শিউলি ফুল নিলে বঁ। হাতে, আসন চাপালে ছবির উপরে, তার পর শাদা কমলা রঙ নিয়ে লাগল ছবিতে ফুলকারি করতে । একবার বা হাতে ফুলটি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে আর ফুল তাকে । দেখতে দেখতে ছবিটি ফুলে ফুলে শাদ হয়ে গেল—আকাশ থেকে যেন পুষ্পবৃষ্টি হচ্ছে, হাওয়াতে ফুল ভেসে এসে পড়েছে রাসলীলার নাচেব মাঝে । রাধার হাতে দিলে একটি কদমফুল, গলায়ও দুলিয়ে দিলে শিমূল ফুলের মালা, কৃষ্ণের বঁাশিতে জড়ালে একগাছি । ফুলের শাদায় জ্যোৎস্না রাত্তির যেন ফুটে উঠল । এইবার টাইক্কান ছবি শেষ করলে, বললে, “এই অভাবটাই মেটাতে পারছিলুম ন৷ এতদিন । সেই ছবি শেষে একদিন দেয়ালে টাঙানো হল । টাইক্কান নিজের হাতে বাধাই করলে, বালুচরী শাড়ির আঁচলা লাগিয়ে দিলে ফ্রেমের চার দিকে । বন্ধুবান্ধবদের ডেকে পার্টি দেওয়া হল স্টুডিয়োতে, রাসলীলা দেখবার জন্য । বড় মজায় কেটেছে সে-সব দিন । টাইক্কান আমায় লাইন ড্রইং শেখাত, কী করে छूनि টানতে হয়। আমরা তাড়াতাড়ি লাইন টেনে দিই--তার কাছেই শিখলুম একটি লাইন কত ধীরে ধীরে , টানে তারা । আমার কাছেও সে শিখত মোগল ছবির নানান Rわや