পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঘ দেখি সেইজন্ত অঙ্কবিদ্যার দিকও মাড়াইতে এখনে সাহস হয় না ; কাজেই জীবনে আমার অঙ্কট বাদ পড়িয়া গেল এবং বলিলে বিশ্বাস করিবে ন, অঙ্কনটা কিছু কিছু বোধগম্য হইল। এই দেখ না কবে যে এস্ট্রান্স পড়িয়াছি (পাশ কাটাইয়াছি) তাহার সঠিক হিসাব আমার নাই তবে একটা সুস্পষ্ট ছবি মনে আছে। সে বৎসর দুরন্ত গরম, মনিং ক্লাস হইতেছে —হেডমাষ্টার মহাশয়ের দাড়ি নড়িতেছে কি নড়িতেছে না,—আর আমি বেঞ্চে বসিয়া গোলদীঘির স্থির জলে চাহিয়া আছি, বইখানার দিকে নয় । স্কুলের চতুর্থশ্রেণীতে কবে পড়িলাম মনে নাই কিন্তু সে সময় একটা জুবিলী না কি হইয়াছিল আর সে উপলক্ষে যে একটা মেডেল কিনিয়া পরিয়াছিলাম তাহাতে কুইন ভিক্টোরিয়ার মুখটি আঁকা ছিল তাহা এখনো আমার বেশ মনে আছে । - এই মেডেল কিনিয়া পরার কথায় আর-একটা কথা মনে পড়িল । অঙ্কনপটুতার জন্য আমি মাস্টারদিগের নিকট হইতে কোনদিন পুরস্কার পাই নাই অথচ পুরস্কারের দিন নিয়মিত স্কুলে হাজির হইতাম। তখন কি জানিতাম যে আমার সঙ্গে অঞ্চশাস্ত্রের যে সম্বন্ধ স্কুলমাস্টারদিগের সহিত অঙ্কনশাস্ত্রের ঠিক সেই একই রকম সম্বন্ধ। আমি বলিয়া এই একটিমাত্র মৃদ্ধ বাণ মাস্টারমহাশয়দের উপরে নিক্ষেপ করিয়াই ক্ষস্তি হইলাম, অন্তলোক হইলে শরশয্যা রচনা করিয়া ফেলিত । স্কুলে পুরস্কার নাস্তি বাটিতে তিরস্কার যথেষ্ট ; এই একটা বাল্যজীবনের চুম্বক ছবি দেওয়া গেল । উনচল্লিশ বৎসরের একটা হিসাব নিকাশ করিতে বসিয়া দেখি যে মাত্র বছর দশ বারে ছাড়া বাকি আর সমস্তটাই খেলায় কাটিয়াছে—রং তুলি গান বাজনা কবিতা প্রবন্ধ লইয়া খেলা করিয়া কাটাইয়াছি,—জীবনটা একবার এ পথে একবার ওপথে । ২৫ বৎসরে আমার জীবনটা ধরা পড়িল এবং পাচ হিতৈষীতে মিলিয়া সেটা বিশ্বকৰ্মার রথে জুড়িয়া দিলেন। প্রথমটা খুব আনন্দে রথ টানিতে লাগিলাম, ক্রমে পৃষ্ঠে কশাঘাত-আর মাঝে মাৰে উৎসাহস্যচক চাপড় খাইতে খাইতে পৃষ্ঠে কড়া পড়িয়া গিয়া এখন মনটা অনেক পোষ মানিয়াছে। এখন \99ూ