সে । টকটকে রঙ, গোফ-দাড়িতে জমকালে চেহারা 1 তার চেহারাট হুবহু শাইলকের ছবি । তার ওপর ইহুদী— জামার আস্তিনে রুপোর বোতাম সারি সারি লাগানো থাকত। তা দেখে চমক লাগত। সে আসত গোলাপ আর আতর বিক্রি করতে। কর্তার, বাবুর, সবাই ছিলেন তার খদের । আমাদের ছোটোদের জন্যও ছোটো ছোটো শিশিতে সে আনত গোলাপি আতর। সেটা আমাদের বার্ষিকী। তার জন্যে পয়সা দিতে হত না তাকে । তার পরেই পুজোর পার্বণীর পাল । ছোটো-বড়োর হিসেবট তখনই বেশ বোঝা যেত। বড়োর বেশি পেত, আর ছোটোর পেত কম ৷ বড়োর কেউ চার টাক, কেউ আট টাকা-৮ আর ছোটোর বয়স হিসেবে এক টাকা থেকে আট আনা চার আনা । এই রকম পার্বণী পেতুম আমরা, চাকরবাকরদেরই হত জোর লাভের মরশুম । তাদের হাতে আমাদের পাওন যার যার পার্বণী জমা করে না দিলে নানারকম মুশকিল বাধত। তবে আমার চাকর রামলাল ওরই মধ্যে একটু লোক ভালো ছিল। সে সর্বৈব ফাকি দিত না, ওই পার্বণীর পয়সা থেকে চীনে বাজারে গিয়ে আমার জন্যে এক-আধটা নতুন খেলনা এনে দিত যে তা বেশ মনে আছে। এই রামলাল চাকর ছিল কয়লাহাটার বাড়িতে ছোটো কর্তা রাজা রমানাথ ঠাকুরের পা-টেপার চাকর । ছোটো কত ভারি শৌখিন মানুষ ছিলেন– হাতের স্পর্শ হিসেবে তাঁর সব তেল মাখানোর চাকর, মাথা টেপবার চাকর, পা টেপবার চাকর, এমনি সব রকম রকম চাকর রাখা হত । ষষ্ঠির আগেই নেমস্তন্ন আসত। ছোটো কর্তার বাড়িতে পুজোর নেমস্তন্ন হত বাড়িমৃদ্ধ ছেলে বুড়ে মেয়ে সকলের। আমাদেরও নেমস্তন্ন রক্ষে করতে ও ছোটো কর্তাকে প্রণাম করতে যেতে হত। সেখানে আবার আরএক প্রস্থ পার্বণী আদায় হত । তিনিই দিতেন পার্বণী, বড়োদাদাকে ( গগনেন্দ্রনাথ ) এক টাকা, মেজোদাদাকে (সমরেন্দ্রনাথ ) আট আনা আর আমি পেতুম চার আনা। একবার আমি তার সামনেই ঘোরতর বেঁকে বসলুম। চার আন নেব না, এক টাকা দিতে হবে । এ বুদ্ধিটা বোধ হয় রামলালই দিয়েছিল। ছোটে। কর্তা সেই বুড়ে পাক আমটির মতো ! এ কথা শুনে ধীরে ধীরে মাথায় হাত বুলিয়ে রূপার সিকিট নিয়ে আস্তে আস্তে ধন্সলেন– এই নাও, নী—ও, রাগ কোরো না, একে বলে টাকার ছানা— এ Westb
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৭৫
অবয়ব