পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঘোচাতে হবে, ছবি আঁকা এত সহজ করে দেব। কারণ এটা আমি নিজে অনুভব করেছি আমার ভাষার বেলায়। রবিকাকা আমাকে নির্ভয় করে দিয়েছিলেন । তা, আমিও ছবি আঁকার বেলায় নির্ভয় তো করে দিলুম, দিয়ে এখন আমার ভয় হয় যে কী করলুম। এখন যা-সব নির্ভয়ে ছবি আঁকা শুরু করেছে, ছবি এ কে আনিছে— এ যেন সেই ব্রহ্মার মতো। কী যেন একটা গল্প আছে যে ব্রহ্মা একবার কোনো একটি রাক্ষস তৈরি করে নিজেই প্রাণভয়ে অস্থির, রাক্ষস তাকে খেতে চায় । ভাবি, আমার বেলায়ও তাই হয় ব। আমার ছবির মূল কথা ছিল, ওই আটকে নিজের করতে হবে, পার ?— সহজ করতে হবে । আমি তো বলি যে অটের তিনটে স্তর তিনটে মহল আছে– একতলা, দোতলা, তেতলা । একতলার মহলে থাকে দাসদাসী তারা সব জিনিস তৈরি করে। তার সাভিস দেয়, ভালো রান্না করে দেয়, ভালো আসবাব তৈরি করে দেয়। তার হচ্ছে সার্ভার, মানে ক্র্যাফটসম্যান— তারা একতলা থেকে সব-কিছু করে দেয় । দোতলা হচ্ছে বৈঠকখান । সেখানে থাকে ঝাড়লণ্ঠন, ভালো পর্দা, কিংখাবের গদি, চার দিকে সব-কিছু ভালে ভালো জিনিস, যা তৈরি হয়ে আসে একতলা থেকে দোতলায় বৈঠকখানায় সে-সব সাজানো হয়। সেখানে হয় রসের বিচার, আসেন সব বড়ে বড়ো রম্বিক পণ্ডিত । সেখানে সব নটর নাচ, ওস্তাদের কালোয়াতি গান, রসের ছড়াছড়ি— শিল্পদেবতার সেই হল খাস দরবার । তেতলা হচ্ছে অন্দরমহল, মানে অস্তরমহল। সেখানে শিল্পী লি: - রি, সেখানে সে মা হয়ে শিল্পকে পালন করছে, সেখানে সে মুক্ত, ইচ্ছেমত শিশু-শিল্পকে সে আদর করছে, সাজাচ্ছে । আর্টের আছে এই তিনটে মহল। এই তিনটি মহলেরই দরকার আছে। নীচের তলার ক্র্যাফটসম্যানেরও দরকার, তারা সব জিনিস তৈরি করে দেবে দোতলার জন্য। ভাল1:রান্না করে দেবে, নয়তে দোতলায় তুমি রসিকজনদের ভালো জিনিস খাওয়াবে কী করে। দোতলায় হয় রসের বিচার। আর তেতলায় হচ্ছে মায়ের মতে শিশুকে পালন করা । গাছের শিকড় যেমন থাকে মাটির নীচে, আর ডালের ডগায় কচি পাতাটি যেমন হাত বাড়িয়ে থাকে আলোবাতাসের দিকে, তেতলা হচ্ছে তাই। এখন দেখতে হবে কাদের কোন তলায় ঠাই। সব মহলেই জিনিয়াস তৈরী হতে পারে, জিনিয়াসের ঠাই ባ¢