পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাল হলে হরকরাকে ওই পাশে দাড়িয়ে থাকতে হত, নিয়ম ছিল তাই। কর্তাদাদামশায় তো বাপকে পেরাম করে ফিরে আসছেন। সেই ঘরে, যেখানে দেওয়ানজি ও আর-আর কর্মচারীরা মিলে টাকার তোড়া ভাগ করছিলেন, সেখানে এসে হরকরাকে হুকুম দিলেন— হরকরা তে দু-হাতে দুটো তোড়া নিয়ে চলল বাবুর পিছু পিছু। দেওয়ানজিরা কী বলবেন— বাড়ির বড়ে ছেলে, চুপ করে তাকিয়ে দেখলেন। এখন, হিসেব মেলাতে হবে— দ্বারকানাথ নিজেই সব হিসাব নিতেন তো । দুটো তোড়া কম। কী হল। আজ্ঞে বড়োবাবু।– ও, আচ্ছা— এখন দু-তোড়া টাকা কিসে খরচ হল জানো ? গানবাজনার ব্যবস্থা হল পূজোর সময়। ছেলের বাড়িতে আমোদ করবে পুজোর সময়। খুব গানবাজনার তখন চলন ছিল বাড়িতে। কুমোর এসে ঘরে ঘরে প্রতিমা গড়ত ; দাদামশায় কুমোরকে দিয়ে ফরমাসমত প্রতিমার মুখের নতুন ছাচ তৈরি করালেন। এখনো আমাদের পরিবারের যেখানে যেখানে পূজো হয় সেই ছাঁচেরই প্রতিমা গড়া হয়। কর্তfদাদামশায়ের কালোয়াতি গান শেখবার শখ ছিল, সে তো আগেই • বলেছি। তিনি নিজেও আমাদের বলেছিলেন, আমি পিয়ানো শিখেছিলুম ছেলেবেলায় সাহেব মাস্টারের কাছ থেকে তা জানো ? আমরা তার গানবাজনা শুনি নি কখনো, কিন্তু র্তার মন্ত্র আওড়ানো শুনেছি। আহা, সে কী সুন্দর, কী পরিষ্কার উচ্চারণ, সে শব্দে চারি দিক যেন গম্গম করত। কর্তাদাদামশায়ের নাক ছিল দারুণ । আমরা তার কাছে যেতুম না বড়ো বেশি, তবে কখনো বিশেষ বিশেষ দিনে পেল্লাম করতে যেতে হলে হাত-পা ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে, গায়ে একটু স্বগন্ধ দিয়ে, মুখে একটি পান চিবোতে চিবোতে যেতম। পাছে কোনোরকম তামাক-চুরুটের গন্ধ পান। আমাদের ছিল আবার তামাক খাওয়া অভ্যেস । একবার কী হয়েছে, পার্কস্ট্রীটের বাড়িতে বাপ-ছেলেতে আছেন— উপরের তলায় থাকেন কর্তাদাদামশায়, নীচের তলায় বড়ো ছেলে দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর। বড়ো-জ্যাঠামশায় তখন পাইপ খেতেন। একদিন বড়োজ্যাঠামশায় নীচের তলায় চানের ঘরে ty R