পাতা:অভাগীর স্বর্গ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মেজবৌ সলজে হাসিয়া কহিল, ওটি তিলক মহারাজের ছবি দেখে বোঝবার চেষ্টা করেছিলাম দিদি, কিন্তু কিছুই হয়নি। এই কথা বলিয়া সম্মুখের দেয়ালে টাঙ্গানো ভারতের কৌস্তুভ মহাবীর তিলকের ছবি আঙুল দিয়া দেখাইয়া দিল । লক্ষ্মী বহুক্ষণ সেদিকে চাহিয়া থাকিয়া আস্তে আস্তে বলিল, চিনতে পারিনি, সে আমারই দোষ মেজবেী, তোমার নয় । আমাকে শেখাবে ভাই ? এ বিদ্যে শিখতে যদি পারি ত, তোমাকে গুরু বলে মানতে আমার আপত্তি নেই । মেজবৌ হাসিতে লাগিল । সেদিন ঘণ্টা তিন-চার পরে বিকালে যখন লক্ষ্মী বাড়ি ফিরিয়া গেল, তখন এই কথাই স্থির করিয়া গেল যে, কলা-শিল্প শিখিতে কাল হইতে সে প্রত্যহ আসিবো । আসিতেও লাগিল, কিন্তু দশ-পনেরো দিনেই স্পষ্ট বুঝিতে পারিলি, এ বিদ্যা শুধু কঠিন নয়, অর্জন করিতেও সুদীর্ঘ সময় লাগিবে } একদিন লক্ষ্মী কহিল, কৈ মেজবেী, তুমি আমাকে যত্ন করে শেখাও a মেজবেী বলিল, ঢ়ের সময় লাগবে দিদি, তার চেয়ে বরঞ্চ: আপনি অন্য সব বোন শিখুন। লক্ষ্মী মনে মনে রাগ করিল, কিন্তু তাহা গোপন করিয়া জিজ্ঞাসা করিল, তোমার শিখতে কতদিন লেগেছিল। মেজবৌ ? মেজবৌ জবাব দিল, আমাকে কেউ তা শেখায নি দিদি, নিজের চেষ্টাতেই একটু একটু করে লক্ষ্মী বলিল, তাইতেই । নইলে পরের কাছে শিখতে গেলে তোমারও সময়ের হিসাব থাকত । মুখে সে যাহাঁই বলুক, মনে মনে নিঃসন্দেহে অনুভব করিতেছিল, মেধা ও তীক্ষ্ম-বুদ্ধিতে এই মেজবৌয়ের কাছে সে দাড়াইতেই পারে না। আজ তাহার শিক্ষার কাজ অগ্রসর হইল না এবং যথাসময়ের অনেক - WVe.