পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
১৮৯
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)
১৮৯

১৮৯ পীঠস্থান ও স্থান মাহাত্ম রহস্য পড়ে। ব্যাপারটা অসাধারণ হলেও অলৌকিক নয়। ২ নভেম্বর বিকেলে কোমরে নাইলনের দড়ি বাঁধা ডুবুরিরা নামল প্রতিমা ডােবাতে। পুলিশের এমন অর্ধামিক কাজে জনতা উত্তেজিত হলাে। পুলিশ উত্তেজিত জনতার ওপর লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হলাে। ডুবুরিরা দেবীপ্রতিমার পাটাতন কেমনভাবে পাথরের খাঁজে আটকে গেছে পরীক্ষা করে মূর্তিকে দড়ি বেঁধে টানাটানি করল, শাবল দিয়ে চাড় দিল, মূর্তি কিন্তু তেমনই দাঁড়িয়ে রইল। উন্মত্ত দড়ি জনতা ডুবুরিদের থামাতে পাথর ছুঁড়তে লাগল। তারই সঙ্গে মাঝে মাঝে সমস্বরে চিৎকার করতে লাগল, “জয় দুর্গে, জয় নর্মদে”, “ধর্ম কী জয় হাে, অর্ধমকা নাশ হে।” দারুণ উত্তেজনার মধ্যে দীর্ঘ সংগ্রামের পর রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ অধার্মিকেরাই জিতে গেল। মা দুর্গা অবশেষে ডুবলেন। খেজুরতলার মাটি সারায় যত লােগ। সময় ২০০২ সাল। খবরটা দিয়েছিল সুদীপ চক্রবর্তী। যুক্তিবাদী সমিতির উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক। হাবড়া পারপাটনা থেকে ৫ কিলােমিটার দূরে একটা খেজুর গাছের তলার মাটি খেতে নাকি প্রতিদিন কয়েক হাজার করে মানুষ আসছেন। শনি-মঙ্গলে ভিড় বাড়ে ব্যাপক। মাটি খেলে নাকি যে কোনও অসুখ সারে, তা সে ক্যানসার হােক, কী এডস। প্রাথমিক সত্যানুসন্ধানের দায়িত্ব দিলাম সুদীপকে। পলাশ ও টিটু দুই যুক্তিবাদীকে নিয়ে সুদীপ অনুসন্ধান চালালেন। মছলন্দপুরের এক এস টি ডি বুথের মালিক তাপস রায় আমার সঙ্গে যােগাযােগ করলেন। অনেক তথ্য জানালেন খেজুরতলা ও বুড়ি মা’র বিষয়ে। সুদীপ জানালেন, এখন প্রত্যেকদিন ভক্ত সমাগম হচ্ছে অন্তত ১৫ হাজার। শনি-মঙ্গলে ভিড়টা ৩০-৪০ হাজারে পৌছচ্ছে। খেজুরতলায় বুড়ি মা’র থানে পুজো দিয়ে বুড়ি মা'র দেখা পাওয়া ব্রজেন ব্রহ্মের ছোঁয়া মাটি খেলেই শুধু অসুখ নয়, সব সমস্যা-ই মিটে যায়। বুড়ি মা আসলে ব্যাঘ্র বাহিনী দুর্গা, নাকি বনবিবি—এই নিয়ে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। | সবশুনে ঠিক করলাম ‘খোঁজ খবর’-এর সঙ্গে কাজটা করব। সুদীপকে আমার পরিকল্পনাটা জানিয়ে বললাম ৪ জুন মঙ্গলবার সকাল ৮টার মধ্যে হাবড়ায় ২ নম্বর রেল গেটে পৌছে যাচ্ছি। যাওয়ার আগে একটা কাজ সেরে ফেললাম। বেলঘরিয়ার আশিস মণ্ডল আশৈশব তােতলা। আশিসকে নিয়ে গেলাম কান-নাক-গলা বিশেষজ্ঞ ডাঃ অমিতাভ ভট্টাচার্যের কাছে। তিনি পরীক্ষা করে নিজের ছাপান পাড়ে লিখেছিলেন বর্তমানে ওর তােতলা হওয়ার কারণ জিভ ও আলজিভের বিশেষ গঠন বৈশিষ্ট্য। 'শিষ্ট্যের কারণ লিখে দিলেন।