পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পীঠস্থান ও স্থান মাহাত্ম রহস্য।
২০৫

টর্নেডোে যদি ১৫ ফুট উঁচু দিয়ে যায় তবে তার যাত্রাপথে পনেরাে
ফুটের বেশি উঁচু গাছ, কী বাড়ির ছাদ যাই পড়ুক ভেঙে
উড়িয়ে নিয়ে যাবে, আর ১০-১২ ফুট পেঁপেগাছ,
কলাগাছ কী চালাবাড়ি সবই থাকবে অটুট।

 ঘূর্ণির এই হাতির শুঁড় তার যাত্রাপথে কখনও মাটি ছুঁয়ে চলে, কখনও কিছুটা উঁচু দিয়ে চলে, কখনও উঠে যায় অনেক উঁচুতে।

 আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা মনে করেন টর্নেডাে ঝড়ের তীব্র ঘূর্ণিতে ধূলিকণাগুলাে ঘূর্ণিত হতে থাকে। ঘর্ষণের তীব্রতায় সৃষ্টি হয় প্রচুর ঘর্ষণজনিত বিদ্যুৎ। এই ঘর্ষণজনিত বিদ্যুৎ মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ গােলার সৃষ্টি করে। এই ধরনের বিদ্যুৎ গােলাই সেদিন দেখেছিলেন গাইঘাটার লােকেরা।

 কলাসীম বাজারের মন্দির আমি দেখেছি। মন্দিরটির বয়েস বছরখানেক। উচ্চতা ফুট দশের মতাে। ওই তল্লাটের কিন্তু শুধু মন্দিরই রক্ষা পায়নি, আরও অনেক কিছুই রক্ষা পেয়েছে। পঞ্চায়েত অফিসের ছাদ উড়লেও অফিসের লাগােয়া ফুট দুয়েক নীচু গাছগুলাের সামান্যতম ক্ষতি হয়নি। আরও লক্ষণীয়, পঞ্চায়েত অফিস ও বিদ্যুৎ দপ্তরের ছাদ গেলেও দেওয়াল বা দরজা, জানালার ক্ষতি হয়নি। তার কারণও ওই একটিই। টর্নেডাে দরজা-জানালার চেয়েও উঁচু দিয়ে বয়ে গেছে।

 কলাসীম বাজারের উলটোদিকে একটি বাড়ি দেখেছিলাম, যার চাল উড়ে গিয়েছিল, কিন্তু ওদের কলাগাছগুলাের কোনও ক্ষতি হয়নি। কলাগাছ খুবই নরম জাতীয় গাছ। ঝড়ে এদেরই সবচেয়ে আগে শুয়ে পড়ার কথা। কলাগাছের উচ্চতার দিকে তাকালেই বােঝা যায় স্বল্প-উচ্চতাই এদের রক্ষা পাওয়ার কারণ। পনেরাে ফুট উচ্চতার সাইনবাের্ডকে ছিঁড়ে নিয়ে যাওয়ার চিহ্ন দেখেছি। আর তারই পাশে অটল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি আট ফুট উচ্চতার চালাঘরকে। অতএব ১০ ফুট উঁচু মন্দির রক্ষার সঙ্গে দেবী-মাহাত্ম্যের কোন প্রমাণ আমি পাইনি। বুঝেছি টর্নেডাে ঝড়ের গতি-প্রকৃতির জন্যেই এমনটা হয়েছে।

যে পাথর শূন্যে ভাসে

 বাংলা ভাষার জনপ্রিয় সাপ্তাহিক ‘পরিবর্তন’-এর ১৬ মে ১৯৭৯-র সংখ্যাটি আর এক ঝড় তুলল। অলৌকিকে ও ঈশ্বর-মাহাত্মে বিশ্বাসীরা পরিবর্তনে প্রকাশিত সংবাদ পাঠে যেমন আপ্লুত হলেন, তেমনি যুক্তিবাদীরা হলেন হতচকিত। সংবাদটির শিরােনাম ছিল, ‘আঙুলের ছোঁয়ায় যে পাথর শূন্যে ভাসে’। প্রতিবেদক শ্রীবিকাশ লিখেছেন, পুণের ২০ কিলােমিটার দূরে এক জাগ্রত পীরের অলৌকিক দরগার কথা। এই দরগার মাজারে রয়েছে দুটি পাথর। একটির ওজন ৬০ কিলােগ্রাম ও অপরটির ওজন ৯০ কিলােগ্রাম। তারপর শ্রীবিকাশ যা লিখেছেন তাই