পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/২৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৯২
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)
২৯২

________________

অলৌকিক নয়, লৌকিক (প্রথম খণ্ড) অভেদানন্দের ধারণাকেই সত্যি ও বিজ্ঞানগ্রাহ্য বলে মনে করে আসছেন। আসুন, আমরা ভােলা মনে যুক্তিবাদী মন নিয়ে দেখি মরণের পারে’ বইটিতে আত্মার বিষয়ে কী কী বলা হয়েছে এবং সেগুলাে কতটা যুক্তিসঙ্গত। স্বামী অভেদানন্দের ‘মরণের পারে’ বইটির ত্রয়ােদশ পুনর্মুদ্রণ হয়েছে, বৈশাখ ১৩৯২ বঙ্গাব্দে। প্রকাশক শ্রীরামকৃষ্ণের বেদান্ত মঠ। প্রথম পাতাতেই লেখা। হয়েছে মরণের পারে (বৈজ্ঞানিক আলােচনা) বৈজ্ঞানিক আলােচনামূলক এই অমূল্য গ্রন্থটির ২৮ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে--বিশেষ এক ধরনের সূক্ষ্ম যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়েছে, যে যন্ত্রটির সাহায্যে মৃত্যুর পর দেহ থেকে বেরিয়ে যাওয়া বাষ্পতুল্য আত্মা বা মনকে ওজন করা সম্ভব। দেখা গেছে আত্মার “ওজন প্রায় অর্ধেক আউন্স বা এক আউন্সের তিনভাগ”। | আত্মার ওজন নেওয়ার যন্ত্র যদি আবিষ্কৃত হয়েই থাকে, তাহলে তাে ল্যাঠাই চুকে যায়। এর পরেও আত্মার অস্তিত্বকে অগ্রাহ্য করে কোন বিজ্ঞানমনস্ক? কোন যুক্তিবাদী ? বিজ্ঞান কিন্তু এমন কোনও যন্ত্রের অস্তিত্বের কথা আজও জানে না। স্বামী অভেদানন্দও জানাননি যন্ত্রটির নাম। এই বিষয়ে পরামনােবিজ্ঞানীরাও রা কাড়েননি। অথচ বাস্তবিকই এমন জব্বর আবিষ্কারের খবর শােনার পর আমার অন্তত জানতে ইচ্ছে করে আত্মা অর্থাৎ মনের ওজন মাপা সূক্ষ্ম যন্ত্রটির নাম, তার আবিষ্কারকের নাম, কত সালে আবিষ্কৃত হয়েছিল, আবিষ্কারক কোন্ দেশের লােক ইত্যাদি বহু প্রশ্নের উত্তর। কিন্তু উত্তর কে দেবেন? কোনও পরামনােবিজ্ঞানী না, শ্রীরামকৃষ্ণ বেদান্ত মঠ? শ্রীরামকৃষ্ণ বেদান্ত মঠ ডাহা মিথ্যে ছেপে দিয়ে খালাস। তাদের উত্তর দেওয়ার দায় নেই। আমি ওদের চিঠি দিয়েও উত্তর পাইনি। আপনারাও চিঠি দিয়ে দেখতে পারেন—কোনও উত্তর আসবে না। | স্বামী অভেদানন্দের ধারণায় আত্মার রূপ বায়বীয় বা কুয়াশার মতাে বাষ্পীয়। তিনি বলেছেন, “মরণের সময় দেহ থেকে যে একপ্রকার সূক্ষ্ম-বাষ্পীয় পদার্থ নির্গত হয়ে যায় তা জ্যোতিষ্মন। ঐ জ্যোতিষ্মান পদার্থটির ফোটোগ্রাফ বা ছবি ভােলা হয়েছে এবং সূক্ষ্মদর্শীরা মরণের সময় দেহ থেকে ওটিকে বার হয়ে যেতেও দেখেছেন। তখন সারা দেহটি এক বিভাময় কুয়াশার পরিমণ্ডলে আচ্ছন্ন হয়।” (পৃঃ ২৮) মরণের সময় প্রতিটি দেহ থেকেই যখন কুয়াশার মতাে আত্মা বেরিয়ে এসে মৃতদেহটিকে আচ্ছন্ন করে রাখে, তখন সকলেই কেন এই আত্মাকে দেখতে পায়