পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মহানুভবতা।
১১১

 এইরূপে আপন অভিপ্রেত সিদ্ধ হওয়াতে, তিনি আন্তরিক পরিতোষলাভ করিলেন, এবং অবিলম্বে এক ভৃত্য ও এক উত্তম পরিচ্ছদ সমভিব্যাহারে লইয়া, সেই যুবকের নিকট উপস্থিত হইয়া বলিলেন, অহে যুবক, তুমি স্বাধীন হইয়াছ, আর তোমায় মুসলমানদিগের দাসত্ব করিতে হইবে না। এই বলিয়া, তিনি স্বহস্তে তদীয় পদদ্বয় হইতে শৃঙ্খলমোচনপূর্ব্বক, নূতন পরিচ্ছদ পবিধান করাইয়া দিলেন। সে, চমৎকৃত ও হতবুদ্ধি হইয়া, এই সমস্ত ব্যাপার স্বপ্নদর্শনবৎ বোধ করিতে লাগিল, এবং সে যে যথার্থ ই দাসত্বশৃঙ্খল হইতে মুক্ত হইযাছে, কোনও ক্রমে তাহার এরূপ প্রতীতি জন্মিল না। কিন্তু, যখন য়ুবর্টো, আপন আবাসে লইয়া গিয়া, তাহার প্রতি স্বীয় সন্তানের ন্যায় স্নেহপ্রদর্শন করিতে লাগিলেন, তখন তাহার অন্তঃকরণ হইতে সকল সংশয অপসারিত হইল। সেই যুবক, য়ুবর্টোর এই অসাধারণ দয়ার কার্য্য ও অলোকসামান্য সৌজন্য দর্শনে মোহিত ও বিস্মিত হইয়া, তদীয় আবাসে কতিপয় দিবস অবস্থিতি করিল।

 কিছু দিন পরেই, এক জাহাজ ইটালি যাইতেছে জানিতে পারিয়া, য়ুবর্টো সেই যুবককে স্বদেশে পাঠাইয়া দেওয়া অবধারিত করিলেন। প্রস্থানকালে তিনি তাহাকে পাথেয়ের উপযোগী অর্থ ও অন্যান্য আবশ্যক দ্রব্য দিয়া বলিলেন, বৎস, তোমার উপর আমার এমনই স্নেহ জন্মিয়াছে যে, তোমাকে ছাড়িয়া দিতে আমার কোনও মতে ইচ্ছা হইতেছে না। তোমার পিতা মাতা