বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সৌভ্রাত্র

খৃষ্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে, পোর্তুগীস্‌দিগের জাহাজ ভারতবর্ষে যাতায়াত করিত, একদা এক জাহাজ, অন্যূন দ্বাদশ শত লোক লইয়া, ভারতবর্ষে আসিতেছিল। প্রথমতঃ কিছু দিন কোনও অসুবিধা বা উপদ্রব ঘটে নাই। ঐ জাহাজ নিয়ে ও নিরুদ্বেগে, আফ্রিকা পর্যন্ত উপস্থিত হইল, অনন্তর উত্তমাশা অন্তরীপ অতিক্রান্ত করিয়া, উত্তরপূর্ব্বাভিমুখে চলিতে চলিতে, আরোহীদিগের দুর্ভাগ্যক্রমে, এক জলমগ্ন পাহাড়ে সংলগ্ন হইল। তলভেদ হইয়া এরূপে জলপ্রবেশ হইতে লাগিল যে, অবিলম্বে উহার অর্ণবপ্রবাহে মগ্ন হওয়া অপরিহার্য্য হইয়া উঠিল।

 জাহাজের উপর পিনেস্ নামে একখানি ক্ষুদ্র তরী ছিল। এই সর্ব্বনাশ উপস্থিত দেখিয়া, কাপ্তেন সেই পিনেস্ জলে ভাসাইলেন, এবং কিছু আহারসামগ্রী লইয়া, আর ঊনবিংশতি ব্যক্তির সহিত উহাতে আরোহণ করিলেন। এতদ্ভিন্ন অনেকে ঐ পিনেসে আসিবার নিমিত্ত উদ্যম করিয়াছিল, কিন্তু অধিক লোক হইলে পাছে মগ্ন হইয়া যায়, এই আশঙ্কায় তাঁহারা তরবারিপ্রহার দ্বারা উহাদিগকে নিবৃত্ত করিলেন। এইরূপে কাপ্তেন ও তৎসমভিব্যাহারীরা প্রস্থান করিলে পর, জাহাজ অবশিষ্ট আরোহিবর্গের সহিত অর্ণবগর্ভে প্রবিষ্ট হইল।

 সমুদ্রপথে, কম্পাস্ ব্যতিরেকে দিঙ্‌নির্ণয় হয় না। জাহাজে