পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬
আখ্যানমঞ্জরী।

কম্পাস্ ছিল, কিন্তু কাপ্তেন, প্রাণবিনাশশঙ্কায় নিতান্ত অভিভূত ও একান্ত ব্যাকুলচিত্ত হইয়া, কম্পাস লইতে বিস্মৃত হইয়াছিলেন। সুতরাং পিনেসের লোকেরা দিঙ্‌নিরূপণ করিতে না পারিয়া, যদৃচ্ছাক্রমে দাঁড় বাহিয়া চলিলেন। সমুদ্রের জল এরূপ লবণময় যে, কোনও ক্রমে পান করিতে পারা যায় না। জাহাজে পানার্থ জল ছিল, পিনেসের লোকেরা ব্যাকুলতা প্রযুক্ত, তাহা লইতে পারেন নাই, এজন্য তাঁহাদের পিপাসানিবন্ধন কষ্টের একশেষ ঘটিয়াছিল। তাঁহারা এইরূপ দুরবস্থায়, পিনেস্, চালাইতে লাগিলেন।

 জাহাজের কাপ্তেন পূর্ব্বাবধি পীড়িত ও সাতিশয় দুর্ব্বল ছিলেন, চারি দিন পরে তাঁহার মৃত্যু হইল। এই দুর্ঘটনা দ্বারা পিনেসে অশেষবিধ বিশৃঙ্খলা উপস্থিত হইতে লাগিল। সকলেই কর্ত্তৃত্বভার গ্রহণে ও আজ্ঞা প্রদানে উদ্যত, কেহই অধীনতাস্বীকারে ও আজ্ঞাপ্রতিপালনে সম্মত নহেন। অবশেষে, সকলে ঐকমত্য অবলম্বন পূর্ব্বক, এক অভিজ্ঞ বৃদ্ধ ব্যক্তির হস্তে কর্ত্তৃত্বভার অর্পিত করিলেন।

 কত দিনে তাঁহারা তীর প্রাপ্ত হইবেন, তাহার নিশ্চয় ছিল না। আর তাঁহারা যে আহারসামগ্রী লইয়া পিনেসে আরোহণ করিয়াছিলেন, তাহা প্রায় নিঃশেষ হইয়া আসিল। সুতরাং স্বল্পাবশিষ্ট ভাগ দ্বারা সকলের অধিক দিন প্রাণধারণ হওয়া কোনও মতে সম্ভাবিত নহে। এজন্য, নুতন কাপ্তেন এই প্রস্তাব করিলেন, আমরা পিনেসে যত লোক আছি, অবশিষ্ট আহার-