পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মাতৃভক্তি

 স্কট্‌লণ্ডের অন্তঃপাতী ডণ্ডী নগরে এক দরিদ্রা নারী বাস করিতেন। তাঁহার একমাত্র শিশু সন্তান ছিল। বৃদ্ধা, অনেক কষ্টে ও অনেক পরিশ্রমে, কিছু কিছু উপার্জ্জন করিয়া, নিজের ও পুত্রের ভরণ পোষণ নির্ব্বাহ করিতেন।

 লেখা পড়া না শিখিলে মূর্খ হইবে, ও উত্তর কালে অনেক দুঃখ পাইবে, এই ভাবিয়া তিনি, লেখা পড়া শিখাইবার নিমিত্ত, পুত্রকে এক বিদ্যালয়ে পাঠাইয়া দিলেন। পুত্রও, বিলক্ষণ যত্ন ও পরিশ্রম করিয়া উত্তমরূপে শিক্ষা করিতে লাগিল।

 ক্রমে ক্রমে, তাহার বয়ঃক্রম দ্বাদশ বৎসর হইল। এই সময়ে, তাহার জননী পক্ষাঘাত রোগে আক্রান্ত হইলেন। তাঁহার অবয়ব সকল অবশ ও অকর্ম্মণ্য হইয়া গেল। তিনি শয্যাগত হইলেন। ইতঃপূর্ব্বে তিনি যাহা উপার্জন করিতেন, তদ্দ্বারা কোন রূপে গ্রাসাচ্ছাদন ও পুত্রের বিদ্যাশিক্ষার ব্যয় নির্ব্বাহ হইত, কিছুমাত্র উদ্বৃত্ত হইত না, সুতরাং, তিনি কিছুই সঞ্চয় করিয়া রাখিতে পারেন নাই। এক্ষণে, তাঁহার পরিশ্রম করিবার ক্ষমতা না থাকায়, সকল বিষয়েই অত্যন্ত কষ্ট উপস্থিত হইল।

 জননীর এই অবস্থা ও কষ্ট দেখিয়া, পুত্র মনে মনে বিবেচনা করিতে লাগিল, ইনি অনেক কষ্টে আমায় লালন পালন করিয়াছেন, ইহার স্নেহে ও যত্নেই, আমি এত বড়