আমাকেও ঘিরে ধরেছিল; কিন্তু যখন জানল যে আমি যাত্রীরূপে এসেছি এবং এদেশে থাকব না তখন তারা উক্ত প্রচেষ্টা বন্ধ করে দিল।
এত দুঃখকষ্ট সহ্য করেও যারা আমেরিকায় গিয়ে পৌঁছে, নিজের স্বদেশবাসী হয়ে এবং এমন কি নিজের জাতভাই হয়েও সামান্য লাভের জন্য এদের পুলিসের নিকট ধরিয়ে দেয় এবং ভারতে ফিরিয়ে পাঠাবার কারণ হয়ে দাঁড়ায়―এর চেয়ে দুঃখের বিষয় আর কি হতে পারে? এটাও সহ্য করা যায়, যেহেতু এসব কাজ যারা করে তাদের হিতাহিত জ্ঞান নাই বললেও চলে। কিন্তু তার চেয়েও বড় দুঃখের বিষয় হল, অনেক শিক্ষিত ভারতবাসী আমেরিকাতে গিয়ে বাজে কাজে দিন যাপন করে অথচ এই সব হিতাহিত জ্ঞানশূন্য স্বদেশবাসীদের সৎবুদ্ধি দিয়ে পথে আনার কোন ব্যবস্থাই করে না। হউক না এ সকল লোক মুসলমান ধর্মাবলম্বী? বিদেশের লোক ত ধর্ম বিচার করে না, অথবা ধর্ম দিয়ে জাতের নামকরণও করে না, এটা জানা সত্ত্বেও উদাসীন হয়ে এসব নিরক্ষরদের উপকার না করা মহা অন্যায় কাজ। অনেকে আবার “ফেলোসিপ অব রিলিজিয়ন” নিয়ে বেশ চিৎকার করেন, এবং সে চিৎকার আমি স্বকর্ণে শুনেছি। কিন্তু এই নিরক্ষর মুসলমানরা কি সকল ধর্মের বাইরে? যে সকল ভারতীয় ধর্মপ্রচারক আমেরিকায় গিয়ে ধর্মপ্রচার করেন তাদের দৃষ্টিও ওদের দিকে পড়ে না। বিঠল ভাই প্যাটেল যখন আমেরিকায় গিয়েছিলেন তখন তিনি এসব অশিক্ষিত লোকের মাঝেই বসে থাকতেন। এসব অশিক্ষিত লোক তাঁকে আপনজনই করে নিতে পেরেছিল কারণ বিঠল ভাইও এদের অন্তর দিয়ে ভালবাসতেন। অনেক আমেরিকান বিঠলভাইএর অনুরাগীদের সংখ্যা দেখে তাজ্জব হয়েছিল। যারা স্বদেশবাসীকে মূর্খ এবং অপদার্থ ভেবে দূরে রাখতে চান তাঁরা বোধহয় জানেন না, তাঁরা সমাজের কতবড় শত্রু।