বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/২২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১০
আজকের আমেরিকা

হিন্দু। তাঁর পূর্বপুরুষ আকের চাষ করবার মজুর হয়ে প্রথম ত্রিনিদাদে যান―তাঁরই বংশের শিক্ষা এবং চালচলনে নিজেকে হিন্দু প্রমাণ করতে পেরেছেন বলেই শ্বেতকায়দের ব্লকে স্থান পেয়েছেন।

 অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এই হিন্দু পরিবারের সংগে থাকা আমার পক্ষে অসম্ভব হয়ে উঠল। কারণ এরাও নিগ্রোদের ঘৃণা করে। তাঁদের এই নিগ্রো-বিদ্বেষ যাতে বেশী না দেখতে হয়, সেজন্যে বাইরে বাইরেই সময় কাটাতে লাগলাম। দুপুরে একটার সময় ঘুম থেকে উঠে বের হতাম, রাত চারটার আগে ফিরে আসতাম না। সমস্ত শহরটাকে একবার ঘুরে দেখার ইচ্ছা হল। এই শহর খুন ও ডাকাতির জন্যে বিখ্যাত। এখানে চোর আছে, বিশ্ববিদ্যালয় আছে, মিউজিয়াম আছে, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কশাইখানা আছে। এই শহরের বিশেষত্ব হল, এখানে অনেক বৈগ্যানিক ও সাহিত্যিক থাকেন। বৈগ্যানিক এবং সাহিত্যিকেরা এই নগরকেই তাদের প্রধান আস্তানা করে নিয়েছেন, তার একটা কারণ আছে। সাধারণত যাঁরা সাহিত্য এবং বিগ্যান চর্চা করেন, তাঁরা নির্জনতাপ্রিয় এবং দারিদ্র্য তাদের চিরসংগী। এই নগরে অনেক বাড়ি আছে, যেখানে সস্তায় থাকা যায়। সেজন্যই দরিদ্র বৈগ্যানিক এবং সাহিত্যিকদের এখানে এসে থাকতে হয়। এদেশে অনেক সাহিত্যিক সাহিত্যকে পেশা করেন না, সাহিত্য তাঁদের সাধনার বস্তু। তাঁদের পাড়ায় একদিন গিয়েছিলাম।

 বেলা তখন তিনটা। রাস্তায় লোক চলাচল কমে এসেছে। এক দিকের ফুটপাথের ছায়ায় বসে একদল ছেলে জুয়া খেলছে। তাদেরই কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম, যেন তাদের জুয়া খেলা দেখতে আমি ভয়ানক ইচ্ছুক। তাদের একজনকে জিগ্যাসা করলাম, এখানকার যিনি সবচেয়ে বড় লেখক, তিনি কোথায় থাকেন বলতে পার?