পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী

১৮ই ডিসেম্বর ১৯৪১:

 কেদা ও পেনাংএর পতন হইয়াছে।

 জাপানীদের লক্ষ্য সম্ভবত সিঙ্গাপুর—বার্মা নয়। সিঙ্গাপুর দুর্ভেদ্য বন্দর; জাপানীদের সাধ্য নয় তাহা দখল করা। রেঙ্গুন আক্রমণের আশঙ্কার ভার মন হইতে অনেকটা নামিয়া গেল।

২৩শে ডিসেম্বর ১৯৪১:

 সাইরেনের শব্দ—উঁয়া-আ-আ—উঁয়া-আ-আ! নিশ্চয়ই সতর্ক করিবার মহড়া। কি বিশ্রী শব্দ! মনে হইতেছে যেন লক্ষ লক্ষ পুত্র শোকাতুরা জননী একসঙ্গে আর্ত্তনাদ করিতেছে। বাতাস চিরিয়া সেই করুণ সুর চারিদিক ছাইয়া ফেলিয়াছে। উয়া—আ-আ, উয়া—আ-আ-আ ···। সাইরেন্ কিছুক্ষণ কাৎরাইয়া কাৎরাইয়া কাঁদিয়া চুপ করিল। রাস্তার যানবাহন-লোক চলাচল সব কখন থামিয়া গিয়াছে। চারিদিকে একটা গমগমে ভাব।

 একটু পরেই কাণে গেল এরোপ্লেনের শব্দ—কিন্তু যেন অন্য ধরণের। ভম্-ভম্-ভম্ ভম্—যেন অসংখ্য ভীমরুল একসঙ্গে গুঞ্জন করিয়া উড়িয়াছে। জানালা হইতে দেখিলাম—প্রায় ৩৫।৩৬ খানা এরোপ্লেন ঝাঁক বাঁধিয়া চলিয়াছে অনেক উচ্চে।

 দুরে ত্রস্ত আকাশের পটে এক ঝলক আলোক বিদ্যুতের তরবারির মতন ঝলসিয়া উঠিল। সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের বুক চিরিয়া একটা শব্দ হইল—সোঁ-ও-ও-ও। তারপরই—গুম্-গুম্-গুম-গুম্। বোমা পড়িতেছে। মনে হইল অফিস অঞ্চলে। আমার ঘরের জানালা-দরজা জিনিষপত্র মধ্যে মধ্যে কাঁপিয়া উঠিতেছে।

 মেশিন গান্, এণ্টি-এয়ারক্রাফ্‌ট্‌, বোমার শব্দ একসঙ্গে মিলিয়া