পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী

 জিজ্ঞাসা করিলাম—‘আপনিতো পূজার সময় দেশে গিয়াছিলেন; বর্মায় কবে আসিলেন?’

 ‘দাদা, বৌদি রেঙ্গুনে ছিলেন; খবর না পাওয়ায় ২রা জানুয়ারী অনেক কষ্টে এরােপ্লেনে ফিরিয়া আসি তাঁহাদের খোঁজে। আসিয়া জানিলাম—তাঁহারা হাঁটা পথে দেশের দিকে রওনা হইয়াছেন। আমি আর ফিরিতে পারিলাম না। যখন জাপানীরা আসে আমি তাহাদের হাতে পড়ি। ভারতীয় হিন্দু জানিয়া আমায় ছাড়িয়া দেয়।’

 আমি জিজ্ঞাসা করিলাম— ‘এখনো কি ব্যবসায় করিতেছেন?’

 ‘না। আমি ভারতীয় স্বাধীনতা সঙ্ঘের (ইণ্ডিয়ান ইণ্ডিপেণ্ডেন্স্ লীগ) কাজ করিতেছি।’

 ‘সে আবার কি?’

 ‘রাসবিহারী বসুর নাম শুনিয়াছেন তো?’

 ‘হাঁ শুনিয়াছি। সেই যিনি ভারতবর্ষ হইতে পলায়ন করিয়া জাপানে গিয়াছিলেন?’

 ‘হাঁ। রাসবিহারী বসু গত মার্চ মাসে টোকিওতে পূর্ব এশিয়ায় প্রবাসী ভারতবাসীদের একটা সম্মিলনের ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। ২৮শে হইতে ৩০শে মার্চ, তিন দিন এই সম্মিলন হয়। রাসবিহারী বাবু সভাপতি ছিলেন। সেই সভায় ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য ইণ্ডিয়ান ইণ্ডিপেণ্ডেন্স্ লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়।’

 ‘জাপানীরা কি ভারতবর্ষ আক্রমণ করিয়াছে?’

 ‘না। বার্মা তাহারা দখল করিয়াছে। জাপানীরা নিজেরা ভারত আক্রমণ না করিয়া আমাদের অস্ত্রশস্ত্র ও অর্থ দিয়া সাহায্য করিবে। আপনিও আসুন আমাদের সঙ্গে।’