২১শে ডিসেম্বর ১৯৪৩:
আজ সন্ধ্যায় কিছু ভালো লাগিতেছে না। পশ্চিমের আকাশে সুর্য্যাস্তের রঙের খেলা চলিয়াছে—তাহারই খানিকটা ঘরের ভিতরে সমস্ত জিনিষের উপর রঙ্ ফলাইয়া দিয়াছিল। এমন সুন্দর সন্ধ্যা—যদি জানকী আসিত।
এমন সময় দরজার পর্দা সরিয়া গিয়া দেখা দিল, দুটি চঞ্চল চোখ। জানকী আসিয়াছে। গতিভঙ্গীমায় উচ্ছ্বলিত লাবণ্যের তরঙ্গ তুলিয়া ঘরের ভিতর প্রবেশ করিল।
‘তোমার কথাই ভাবিতেছিলাম।’
‘মিথ্যা কথা বলো না—কাহার কথা ভাবিতেছিলে কে জানে?’
তাহার চোখে রহস্যের কুহেলিকা।
‘কি দেখিতেছ?’
‘তোমাকে। আমি ভাবিতেছিলাম—তোমার চোখের চাহনি, তোমার বন্দুকের গুলির অপেক্ষা কম শক্তিশালী কখনই নয়।’
উজ্জ্বল হাসির ধারায় অভিষিক্ত করিয়া সে বিছানার উপর আমার পাশে আসিয়া বসিল।
আমি বলিলাম—‘জানকী, তোমার গান শুনাইবে বলিয়াছিলে। আজ গাহিতে হইবে।’
‘আমি তো গান ভাল জানি না। আমাদের নূতন জাতীয় সঙ্গীত শুনিয়াছ কি?’
‘তাহাই গাও।’
জানকী গাহিল।