পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
১৬১

 

শ্রীযুক্ত দীননাথের সাক্ষ্য

 পরবর্তী সাক্ষী আজাদ হিন্দ ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর শ্রীযুক্ত দীননাথ সাক্ষ্য দান করেন। তিনি ব্রহ্মে কাঠের ব্যবসা ও ইঞ্জিনিয়ারিং কণ্ট্রাক্টর ছিলেন এবং পরে আজাদ হিন্দ ব্যাঙ্কের ডিরেক্টার হন। তিনি বলেন যে রেঙ্গুণে ১৪নং পার্ক রোডে উক্ত ব্যাঙ্কের রেজিষ্টার্ড অফিস ছিল এবং উহা ব্রহ্মদেশীয় আইন মতে রেজিষ্টারী করা হইয়াছিল। রেঙ্গুণে নেতাজী ফাণ্ড কমিটি নামে একটা প্রতিষ্ঠান ছিল। অস্থায়ী আজাদ হিন্দ সরকারের সাহায্যকল্পে চাঁদা তোলাই উহার কার্য্য ছিল। সংগৃহীত অর্থ আজাদ হিন্দ ব্যাঙ্কে অথবা আজাদ হিন্দ সরকারের রাজস্ব বিভাগে জমা হইত। অর্থ ও দ্রব্য উভয়ই সংগৃহীত হইত। উক্ত অর্থ সময় সময় সরকারী কার্য্যের জন্য ব্যয় করা হইত। উক্ত অর্থের পরিমাণ রেঙ্গুণে ১৫ কোটী টাকা ও মালয়ে ৫ কোটী টাকা ছিল। এই সংগৃহীত অর্থ ছাড়া ব্যক্তিগত ভাবেও অনেকে এই ব্যাঙ্কে টাকা গচ্ছিত রাখিত এবং উহার পরিমাণও প্রায় ৩০।৪০ লক্ষ টাকা ছিল। ১৯৪৪ সালের এপ্রিল হইতে ১৯৪৫ সালের মে মাস পর্যন্ত ব্যাঙ্ক চালু ছিল। রেঙ্গুণ অধিকৃত হইবার পর বৃটিশ সামরিক কর্তৃপক্ষ উক্ত ব্যাঙ্ক বন্ধ করিয়া দেন। এই সময় আজাদ হিন্দ ফৌজের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ ছিল ৩৫ লক্ষ টাকা।

 আরও প্রশ্নের উত্তরে সাক্ষী বলেন যে, অধিকৃত ভূভাগের যাবতীয় উৎপন্ন আজাদ হিন্দ সরকারে জমা হইত।

 ভারতীয় স্বাধীনতা লীগের কার্য্যাবলী সম্পর্কে সাক্ষী বলেন যে, পূর্ব্ব এশিয়ার প্রায় সকল স্থানেই লীগের শাখা স্থাপিত ছিল এবং বিভিন্ন শাখা বিভিন্ন কার্য্য করিত। যেমন, সৈন্য সংগ্রহ করা, ট্রেণিং দেওয়া, প্রচার, এ, আর, পি, বালসেনা প্রভৃতির তত্ত্বাবধান করা। অনুপস্থিত ভারতীয়দের সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ করা, দুঃস্থদের সাহায্য করা, এ আর পি ব্যবস্থার প্রতি লক্ষ্য রাখা ও শিশুদের শিক্ষার জন্য বিদ্যালয় পরিচালনা করাই প্রধান প্রধান কার্য্যাবলীর মধ্যে গণ্য ছিল।