পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
১৮৫

 দেশ এবং রাজা যদি একই দেশ সম্পর্কে হয় তাহা হইলে দেশ ও রাজার বিরুদ্ধে যাওয়া মানেই বিশ্বাসঘাতকতা। কিন্তু যখন যাহারা স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করিতেছে এবং সাময়িকভাবে তাহাদের উপর বিদেশী রাজার প্রতি আনুগত্য স্বীকারের কর্ত্তব্যভার চাপান হইয়াছে, তখনই প্রশ্ন উঠে।

 মানুষের অধিকার সম্পর্কে বর্ত্তমান পৃথিবী যে কতখানি অগ্রসর হইয়াছে, পরে আমি এই বিষয়ে কতকগুলি অনুচ্ছেদের উল্লেখ করিব। যখন আপনি নামে রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতেছেন কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেশের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করিতেছেন, আনুগত্যের প্রশ্ন সেখানে উঠে কি? দেশের জন্য আপনি সংগ্রাম করিতেছেন, তখন অন্য কাহারও প্রতি আনুগত্যের প্রশ্ন আপনার সংগ্রামের পথে বাধা সৃষ্টি করিবে কি? বৃটেন কর্ত্তৃক যাহাদের আত্মসমর্পণ করিতে বলা হইল, অবস্থার চাপে পড়িয়া দেশ না রাজার প্রতি আনুগত্যের প্রশ্নের সম্মুখীন তাহাদের হইতে হইয়াছিল।”

 “বলা হইয়াছে যে আজাদ হিন্দ ফৌজ জাপানীদের হাতের পুত্তলী ছিল। এখন ইহাই বিচার্য্য বিষয় হইতেছে যে, আজাদ-হিন্দ ফৌজ একটি পূর্ণাঙ্গভাবে গঠিত বাহিনী ছিল কি না। সরকার পক্ষ হইতে বারবার বলা হইয়াছে যে, জাপানী বাহিনীর তুলনায় আজাদ-হিন্দ-ফৌজ অত্যন্ত ছোট ছিল। ছোট হউক বড় হউক, একথা প্রমাণিত হইয়াছে যে, আজাদ-হিন্দু-ফৌজ জাপানের মিত্রবাহিনী হিসাবেই সংগ্রাম করিয়াছিল। ইহা এমন কোন অসঙ্গত ছিল না—কেন না উভয় বাহিনীই ভারতকে বৃটিশের কবল হইতে মুক্ত করিতে চাহিয়াছিল। মিত্রপক্ষ ফ্রান্স, বেলজিয়াম বা অন্য অন্য দেশে যে ভাবে পাশাপাশি যুদ্ধ করিয়াছে, আজাদ-হিন্দ ফৌজ এবং জাপানী বাহিনীও তেমনি পাশাপাশি একই উদ্দেশ্যে সংগ্রাম করিয়াছে। যদি একই সেনানায়কের অধিনায়কত্বে দুইটি বাহিনী যুদ্ধ করিতে পারে, তখন কোন্ বাহিনী কোন্ দেশের সে প্রশ্ন সেখানে উঠে না। বৃটিশ ও আমেরিকান বাহিনী যখন