পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
২২৩

আসামীদের বিরুদ্ধে মারপিট ও নানাপ্রকারে প্রলুব্ধ করিবার অভিযোগ করে। সরকারী সাক্ষী লেঃ পুরুষোত্তম দাসও তাঁহার সাক্ষ্যে অনুরূপ অভিযোগ করেন।

 ১৮ই ফেব্রুয়ারী তারিখে আসামী পক্ষীয় কৌঁসুলীর সওয়াল সমাপ্ত হয়। বক্তৃতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিজয়ী যেরূপ ভাবে পরাজিতের সহিত ব্যবহার করে, বর্ত্তমান মামলায় আসামীদের প্রতি সেইরূপ ব্যবহার করা উচিত। আসামীরা সাহসী সৈনিকের ন্যায় যুদ্ধ করিয়াছেন, অতএব তাঁহাদের সহিত যোদ্ধার ন্যায় ব্যবহার করাই উচিত।

 আসামীদ্বয় ভারতকে স্বাধীন করিবার উদ্দেশ্য লইয়া আজাদ হিন্দ ফৌজে যোগ দিয়াছিলেন এবং ঐ উদ্দেশ্যেই স্বেচ্ছায় তাঁহারা সংগ্রাম করিয়াছেন। রাজার প্রতি তাঁহাদের আনুগত্যের কথা উঠিতে পারে না। কাজেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২১ ধারা অনুসারে অনুষ্ঠিত অপরাধের জন্য তাহাদের বিচার হইতে পারে না।

 যুদ্ধের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বহুবার বলা হইয়াছে যে, পরাধীন জাতির স্বাধীনতা লাভ এবং অন্যান্য জাতির স্বাধীনতা রক্ষার জন্যই এই যুদ্ধ হইয়াছে। একথা সত্য হইলে ভারতকে বিদেশীর হস্ত হইতে মুক্ত করিবার চেষ্টাকে কোন ইংরাজই বে-আইনী কার্য্য বলিয়া বর্ণনা করিতে পারে না। যদি কেহ ঐ কার্যকে নিন্দা করে তবে বুঝিতে হইবে যে, ইংরাজগণ নিজেদেরই নিন্দা করিতেছে এবং নিজেদের গোপন মত প্রকাশ করিয়া দিতেছে।

 ভারতীয়দের রক্ষা করিবার যে দায়িত্ব বৃটিশ গবর্নমেণ্টের আছে, ভারতীয় সৈন্যগণকে জাপানীদের হাতে সমর্পণ করিয়া তাঁহারা সে দায়িত্ব লঙ্ঘন করিয়াছেন।

 কৌঁসুলী আরও বলেন যে, যখন কোন লোক প্রতিষ্ঠিত গবর্ণমেণ্টের বিরুদ্ধে তাহার নিজ দেশকে স্বাধীন করিবার জন্য যুদ্ধ করে তখন আনুগত্যের প্রশ্ন উঠিতেই পারে না।